
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: 
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা শীলপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরটি অবশেষে পুনঃস্থাপিত হচ্ছে। আদালতের নির্দেশে শনিবার থেকে মন্দির পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু হয়। নির্মাণের যাবতীয় ব্যয়বহন করছেন জেলা আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম খান। দীর্ঘ দিনের জাতিগত এই বিরোধ মিমাংসা হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।
শীলপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরটি চারমাস আগে রাতের আধারে কে বা কারা ভেঙ্গে ফেলে। এঘটনায় মামলা দায়ের ও মানবন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন সংগঠন। এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, রাজবাড়ি জেলার জনৈক আক্কাছ আলী শীলপাড়া এলাকায় ১৬০ শতাংশ জমির আরএস রেকর্ড মূলে মালিক ছিলেন। তিনি প্রতিবেশি বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রমথ চন্দ্র ওরফে সূয শীলকে জমিটি দেখাশেনার দায়িত্ব দেন। ওই জমির এক পাশে মন্দির ঘর তৈরি করে স্থানীয় হিন্দু ধর্মালম্বীরা প্রায় ২০ বছর ধরে দুর্গাপূজা করে আসছিলেন। কিন্তু আক্কাছ আলী মারা গেলে তার বৈধ ওয়ারিশানগন ২০০৩ সালে জমিটি ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম খানের কাছে বিক্রি করে দেন। রহিম খান তার জমি বুঝে নিতে গেলে সূযশীলের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে সূযশীল ও তার লোকজন। গত ১০ অক্টোবর রাতের আধারে কে-বা কারা মন্দিরটি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। এঘটনায় ক্রয়সূত্রে জমির মালিক জেলা আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহিম খানসহ তার কর্মচারীদের আসামী করে মানিকগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আদালতে মামলা দায়ের করেন সূযশীল। ক্ষোভের সৃষ্টি হয় হিন্দাধর্মালম্বীদের মধ্যে। প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
জানাগেছে, বিষয়টি সমঝোতার জন্য স্থানীয়ভাবে একাধিকবার উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে পূজা উদযাপন পরিষদের অনুরোধে দুই পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে বসেন শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামাল মোহাম্মদ রাশেদ। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আব্দুর রহিম খান মন্দিরের জন্য ৮ শতাংশ জমি সাবকবলা রেজিষ্ট্রি এবং নিজ খরচে মন্দিরটি পুর্বের অবস্থায় তৈরি করে দিবেন। সমঝোতার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানানো হলে একমাসের মধ্যে মন্দির পুন:স্থাপনের নির্দেশ দেন আদালত। ভূমি অফিস থেকে পরিমাপের পরই শুক্রবার থেকে ওই স্থানে মন্দিরস্থাপনের কাজ শুরু হয়।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শিবালয় উপজেলা আওয়ামলীলীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুস কুদ্দুস জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল মোহাম্মদ রাশেদ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদকে সাথে নিয়ে মন্দিরের ঘটনা মিমাংসা করায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এটি অনেক বড় সফলতা।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল মোহাম্মদ রাশেদ জানান, শীলপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির নিয়ে জাতিগত বিরোধ চলছিলো। এ নিয়ে আদালতে কয়েকটি মামলাও চলমান রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি রক্ষার স্বার্থে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতা করা হয়েছে। এতে সবাই খুশি। তিনি আরো জানান, মন্দিরে যাওয়ার জন্য সরকারী অর্থায়নে একটি রাস্তাও তৈরি করে দেয়া হচ্ছে।
 
				
				
				
 
				
				
			


Leave a reply