পাঁচ টাকা বেতনে শুরু, নিজ মেধায় কোটিপতি!

|

জ্যোতি রেড্ডি ও তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত।

জীবনের সংগ্রাম শুরু মাত্র পাঁচ টাকা বেতনে। মাত্র নয় বছরেই চলে যেতে হয়েছে অনাথ আশ্রমে। সেখান থেকেই নিজ মেধা আর হার না মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে সাফল্যের সর্বোচ্চ চূড়ায় নিয়ে গেছেন ভারতের তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গলের অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া নারী জ্যোতি রেড্ডি। দিনে দুই বেলা খাবার জোটাতে হিমশিম খাওয়া জ্যোতি এখন আমেরিকায় চারটি বাড়ির মালিক।

তার এমন সাফল্যের গল্প উঠে এসেছে ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায়। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে জ্যোতি রেড্ডি ছিলেন দ্বিতীয়। নয় বছর বয়সে শুধু দুই বেলা খাবার জোটার আশায় জ্যোতি আর তার বোনকে অনাথ-আশ্রমে রেখে আসেন তাদের বাবা।

ওই অনাথ আশ্রম থেকে দশম শ্রেণি পাশ করেন জ্যোতি। তারপর বিয়ে করেন। স্বামীর সাথে মাঠে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। দিনে টানা ১০ ঘণ্টা কাজ করে পেতেন মাত্র পাঁচ টাকা। এরপর নিজ মেধা কাজে লাগিয়ে সব কিছু সামলে স্নাতক পাস করেন। একটি স্কুলে মাসে ৩৯৮ টাকায় যোগ দেন শিক্ষক হিসেবে। স্কুলে যাওয়া আসায় লাগতো চার ঘণ্টা। সেই সময়ে বাসে শাড়ি বিক্রি করতেন তিনি। জীবনযাত্রার মানও বদলে গিয়েছিলো জ্যোতির।

তবে জ্যোতি সেখানেই থামতে চাননি। একটু একটু করে টাকা জমিয়ে আমেরিকা যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। শেখেন কম্পিউটার। স্বামীর বারণ না শুনে ২০০১ সালে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমান তিনি। পেট চালানোর জন্য ১২ ঘণ্টার একটি কাজ নেন। যেখানে পেতেন ৬০ ডলার। এর বাইরে কখনও বাচ্চা সামলানো বা কখনও বিপননকর্মীর কাজও করেছেন।

এভাবে দেড় বছর আমেরিকায় কাটিয়ে দেশে ফেরেন তিনি। দেশে ফিরে আমেরিকায় জমানো পুঁজি দিয়ে খুলেন কনসালটেশন কোম্পানি। তার কোম্পানি আমেরিকার ভিসা পেতে সাহায্য করতো। আমেরিকাতেও একই কোম্পানি খুলেন তিনি।

প্রথম বছরেই এক কোটি ২৪ লাখ টাকার ব্যবসা করেন। নিজের প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগ দিতে শুরু করেন। বর্তমানে তার কোম্পানিতে কাজ করছে ১০০ জন কর্মী। আশ্রয় আর খাবারের জন্য সংগ্রাম করা জ্যোতির এখন হায়দরাবাদে একটি এবং আমেরিকায় চারটি বাড়ি। বছরে জ্যোতির কোম্পানির লেনদেন ১১১ কোটি টাকারও বেশি।

/এস এন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply