
ধর্মের বেড়াজাল ছিন্ন করে মানবিকতার অনন্য নজির গড়েছেন দুই নারী। ছবি: সংগৃহীত।
একজন হিন্দু, অন্যজন মুসলিম। তাদের দুই জনের স্বামীই কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন। কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। পাওয়া যাচ্ছিলোনা কিডনি। তারা দুই জনই নিজেদের কিডনি দিয়ে হলেও স্বামীদের বাঁচাতে চান। কিন্তু তাদের রক্তের গ্রুপ মিলছিল না স্বামীর সঙ্গে। এমন অবস্থায় তারা একে অপরের স্বামীকে বাঁচালেন কিডনি দিয়ে। ধর্মের বেড়াজাল ছিন্ন করে মানবিকতার অনন্য নজির গড়েছেন ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের দুই নারী।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার পর গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিকাশ উনিয়াল (৫০) হেমোডায়ালাইসিস করে আসছেন। কিডনির একই সমস্যা আশরাফ আলীরও (৫১)। তাদের দুই জনের কিডনি প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন, কিন্তু দাতা পাওয়া গেলেও কিডনি ম্যাচিং হচ্ছিল না।
বিকাশ এবং আশরাফ দুই জনই উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের হিমালয় হাসপাতালে ভর্তি। তারা দুই জন একই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আছেন। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান, বিকাশের স্ত্রীর কিডনির সঙ্গে আশরাফের মিলে যাচ্ছে এবং আশরাফের স্ত্রীর কিডনির সঙ্গে বিকাশের মিলে যাচ্ছে। পরে তারা দুই জন সিদ্ধান্ত নেন একে অপরের স্বামীকে বাঁচাবেন নিজেদের কিডনি দেওয়ার মাধ্যমে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চিকিৎসক বিকাশ এবং আশরাফের সফল কিডনি প্রতিস্থাপন করেন। বর্তমানে তারা দুই জন সুস্থ আছেন।
হিমালয় হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ নেফ্রোলোজিস্ট ডা. শাহবাজ আহমেদ বলেন, বিকাশ এবং আশরাফের স্ত্রীরা নিজ নিজ স্বামীর জন্য কিডনি দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু তাদের রক্তের গ্রুপ ম্যাচিং করছিল না। পরে দেখা যায়, বিকাশের স্ত্রী সুশমার রক্তের গ্রুপ আশরাফ আলীর সঙ্গে ম্যাচ করছে এবং আশরাফের স্ত্রী সুলতানার রক্তের গ্রুপ বিকাশের স্ত্রীর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে ম্যাচ করছে।
সুশমা বলেন, এটি সৌভাগ্যজনক, কাকতালীয় ঘটনা। আমার স্বামী গত আড়াই বছর ধরে ভুগছেন। অস্ত্রোপচারের আগে আমাদের সব ধরনের পরীক্ষা করা হয়। এতে কোনও সমস্যা ধরা না পড়ায় আমরা একে অপরের স্বামীকে কিডনি দিয়েছি।
সুলতানা বলেন, অর্থ এবং মানসিক উভয় দিক থেকে আমাদের কাছে এর মূল্য অনেক। আমরা এই পরিস্থিতিতে পরস্পরকে সাহায্য করতে পেরেছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।



Leave a reply