শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের বোন নাফিসা কবীর আর নেই

|

নাফিসা কবীর (৯০)


শহীদ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সার এবং প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হানের সহোদরা নাফিসা কবীর (৯০) নিউমোনিয়াজনিত জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নাফিসা কবীর ছিলেন দ্বিতীয়। অত্যন্ত মেধাবী ও প্রতিভাসম্পন্ন ছাত্রী হিসেবে তিনি তৎকালীন ফেনী মহকুমার আমিরাবাদ হাই স্কুল থেকে সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে গোল্ড মেডেল অর্জন করেন।

পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে কৃতিত্বের সাথে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ছাত্র জীবনে ভাইদের সাথে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলেন। তার স্বামী মরহুম ডাঃ এম, এ কবীর ঢাকা মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস প্রথম ব্যাচের ছাত্র থাকাকালীন স্বামীর সাথে ভাষা আন্দোলনে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনিও।

ষাটের দশকের শুরুতেই স্বামীর বিদেশে উচ্চতর লেখাপড়ার সুবাদে প্রথমে যুক্তরাজ্য ও পরে যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন নাফিসা কবীর। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি এস্টেটের সেন্ট লুই শহরে বসবাস করলেও দেশ-মাতৃকার টানে পরিবারসহ নিয়মিত দেশে আসতেন তিনি।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদেরকে সাথে নিয়ে তিনি ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দেখা করেন। বঙ্গবন্ধু তার সহজাত উদারতা ও আন্তরিকতার সাথে তাঁদের আর্জি শোনেন এবং দ্রুততম সময়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের পুনর্বাসনে প্রত্যেক পরিবারকে ঢাকায় বাসস্থানের ব্যবস্থা করেন।

মানবতা, নারী-পুরুষের সমতা, সুশাসন এবং গণতন্ত্রের উন্নয়নে আমৃত্যু কাজ করে যাওয়া বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী নাফিসা কবীর মৃত্যুকালে চার মেয়ে, এক ছেলে, নাতি-নাতনী, দুই অনুজ, একজন সহোদরা বোনসহ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে নাফিসা কবীরের রূহের মাগফিরাত কামনায় সকলের দোয়া চাওয়া হয়েছে।


/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply