
শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন একেএ সালমান শাহ (১৯৭১-১৯৯৬)
বাংলা সিনেমার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা যার নাম, তিনি সালমান শাহ। তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও একবিন্দু কমেনি তার জনপ্রিয়তা ও আবেদন। বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আরও অনেক বেশি রঙিন হয়েছে তাকে নিয়ে ভালোবাসার রঙ।
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম সালমান শাহ। তার জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ই সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায়। সালমান পড়াশোনা করেন খুলনার বয়রা মডেল হাইস্কুলে। একই স্কুলে চিত্রনায়িকা মৌসুমী তার সহপাঠী ছিলেন।
১৯৮৭ সালে তিনি ঢাকার ধানমন্ডি আরব মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ও ধানমন্ডির মালেকা সায়েন্স কলেজ থেকে বি.কম পাস করেন।

১৯৮৬ সালে হানিফ সংকেতের কন্ঠে গাওয়া ‘নামটি ছিল তার অপূর্ব’ গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হওয়ার মাধ্যমেই সালমান শাহ মিডিয়াতে প্রথম সবার নজর কাড়েন। তখন তিনি ‘ইমন’ নামেই পরিচিত ছিলেন।
গায়ক হিসেবেও সালমানের পরিচিতি ছিল। ছোটবেলা থেকেই শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি দারুণ আগ্রহ ছিল তার। বন্ধুমহলে সবাই তাকে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে চিনতেন। ১৯৮৬ সালে ছায়ানট থেকে পল্লী গীতিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রে অভিনয়ে আসার আগেই ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট সাবেক ক্রিকেটার শফিকুল হক হিরার কন্যা সামিরার সঙ্গে বিয়ে হয় সালমানের।

রূপালি পর্দায় সালমান সাম্রাজ্যের সূচনা হয় নব্বই দশকের শুরুর দিকে সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। এ সিনেমায় তার সাথে জুটি বেধেছিলেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। মাত্র চার বছরে ২৭টি সিনেমা করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় দশটি অসমাপ্ত সিনেমা।

সালমান শাহ ছিলেন একজন স্টাইল আইকন। ফ্যাশনের দিক থেকে তিনি ছিলেন সেরাদের সেরা। মাথায় ব্যান্ডানা, চোখে সানগ্লাস এবং হাতের ব্রেসলেট থেকে লুঙ্গি পরা গ্রামের মাঝি পর্যন্ত সবভাবেই তিনি নিজেকে ফুটিয়ে তুলেছেন বড় পর্দায়। আর এভাবেই তরুণদের মাঝে স্টাইল আইকনে পরিনত হন খুব দ্রুতই।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ২৫ বছর। অল্প সময়ের জন্য সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন তিনি তাই বলেই দ্যুতি ছড়িয়ে গিয়েছিলেন তার সুনিপুণ কাজের মাধ্যমে। তার অনুপস্থিতি আর অকাল প্রস্থান আজও পোড়াচ্ছে অগুনতি মানুষের মন।
/এসএইচ



Leave a reply