ঠাকুগাঁওয়ে শতবর্ষী খেলার মাঠের জমি নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষ, মাঠ সংরক্ষণের দাবি

|

ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের শতবর্ষী এক খেলার মাঠের মালিকানা নিয়ে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। দীর্ঘকাল ধরে যেটি খেলার জন্য ব্যবহার হয়ে এসেছে; সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চায় নতুন করে জমির মালিকানা দাবি করা একটি পক্ষ। এ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। যেকোনো মূল্যেই হোক, শিশু-কিশোরদের এ খেলার মাঠ রক্ষার দাবি স্থানীয়দের।

প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরোনো খেলার মাঠের মালিকানা দাবি করেছে একটি পক্ষের। সেখানে সাইনবোর্ড বসাতে গেলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয়রা। হয় সংঘর্ষ, আহত হয় উভয় পক্ষের বেশ ক’জন।

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের শিশু-কিশোরদের একমাত্র খেলার স্থান ওই মাঠটি। সম্প্রতি হঠাৎই শোনা যায়, বিক্রি হয়ে গেছে মাঠের জমি। এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়তে চায় জমির নতুন মালিক। এমন সিদ্ধান্তে হতবাক বহু বছর ধরে এ মাঠ ব্যবহারকারীরা।

স্থানীয়রা জানান, দেড়শ বছর আগে স্থানীয় কয়েক জন মিলে এই খেলার মাঠের জন্য জমি দান করেন। এরপর পার হয়ে গেছে কয়েক প্রজন্ম। এতোদিন কেউ দাবি না করায় অনেকে এটিকে খাস জমি বলেও জানতেন। বংশ পরম্পরার হিসেব টেনে সম্প্রতি দুই জন মাঠের অধিকাংশ জমির মালিকানা দাবি করে তাদের অংশ বিক্রি করে দেন। এতেই তৈরি হয় জটিলতা।

বিক্রি করা জমির মালিক নুরুল হুদা বলেন, জমিটির রেকর্ড আমার বাবার নামে ছিল। এখন সাংসারিক প্রয়োজনে আমার টাকার দরকার, তাই আমি জমিটি বিক্রি করে দিয়েছি।

অবিক্রিত জমির মালিক নাজমুল হুদা শাহ অ্যাপোলো বলেন, জমিটা যেমন আমাদের নামে আছে, তেমনি আরেকজনের নামেও আরেকটি দাগে জমি আছে। তারা বিক্রি করেও গেলো না; অথচ যারা ঠাকুরগাঁও থেকে জমিটা কিনেছে তার মাস্তান বাহিনী এনে ভূমিদস্যুতা করছে।

এদিকে, যারা জমি কিনেছেন তাদের দাবি, নিয়ম মেনেই হয়েছে সব। বিক্রি করা জমির মালিক নুরুল হুদা বলেন, আমি কাগজ যদি রেজিস্ট্রি না করি বা সাব রেজিস্ট্রার যদি সই না দিতো তাহলে আমার বাবারও ক্ষমতা নেই ওই জমি কেনার। কোনো কাগজে কেউ সোহেল শাহ্‌র নাম দেখাতে পারবে না। তাদের নামে কোনো কাগজ নাই, খারিজ নাই, পর্চাও নাই।

বায়না সূত্রে জমির মালিক হওয়া সজল কুমার চৌধুরী বলেন, আমরা জমিতে সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে ১০০-১৫০ জন স্থানীয় সন্ত্রাসী দেশিয় অস্ত্রসহ আমাদের ওপর হামলা করে।

মাঠ রক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা

গড়েয়া ইউপি চেয়ারম্যান রইচ উদ্দীন সাজু বলেন, জমির যে প্রকৃত মালিক তারা যদি সেটিকে সার্বজনীন করতে চায় তাহলে জমির আসল মালিক স্থানীয়দের সাথে মিলে সমন্বয় করে এটা করতে হবে।

ঠাঁকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, ব্যাপারটি যেনো কোনোভাবেই জনগণের স্বার্থ বিরোধী কিছু না হয় সেদিকে সবসময়ই আমাদের সতর্ক দৃষ্টি থাকবে।

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, প্রয়োজনে জমি সবাই মিলে কিনবেন; তবুও মাঠের এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়বেন না তারা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply