চট্টগ্রামে সুরক্ষা ছাড়াই ভবন নির্মাণ, ঝুঁকিতে পথচারীরা

|

সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ভয়ংকর এ দৃশ্য।

ব্যস্ত বন্দরনগরীর পথে পথে যেনো বিপদ আর দুর্ঘটনার আশঙ্কা। সম্প্রতি চট্টগ্রামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সে ভয়াবহতা দেখলেন স্বচক্ষে। নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের উপর থেকে নিচে ভারি নির্মাণ সামগ্রী পড়লেও ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা সে দৃশ্য দেখলে গা শিউরে উঠবে যে কারও। চট্টগ্রামে কোনো সুরক্ষা ছাড়াই ভবন নির্মাণের কারণে চরম ঝুঁকিতে এখন পথচারীরা।

সম্প্রতি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন বাংলাদেশ মহিলা সমিতি স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী খন্দকার জেবা ফারিহা। ঘটনাটি চট্টগ্রাম মহানগরীর আমিরবাগ আবাসিক এলাকার। বায়ো প্রপার্টিজ নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির নির্মাণাধীন বহুতল ভবন থেকে বিশাল স্টিলের একটি পাত বিকট শব্দে নিচে পড়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় জেবা প্রথমে বুঝতে পারেননি বিষয়টা কতোটা ভয়াবহ, এখন টের পাচ্ছেন কীভাবে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন।

ভুক্তভোগী খন্দকার জেবা ফারিহা বলেন, ওই বিল্ডিং থেকে প্রায়ই কিছু না কিছু পড়ে। এজন্য প্রথমে পাত্তা দেইনি। এতো বড় কিছু পড়বে তা ভাবতেই পারিনি। ওটা আমার ওপরে পড়লে মারা যেতাম নিশ্চিতভাবেই।

এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ চায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার। জেবা ফারিহার বাবা অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন সোহেল বলেন, অনেক শুকরিয়া যে আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। কিন্তু, এই ব্যাপারটাকে সামনে আনা উচিত। আমি চাই সরকার, দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে সচেতন হন এবং এ ব্যাপারে আইনের প্রয়োগ ঘটান।

এমন ঘটনা এই প্রথম নয়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রায়ই ঘটছে। কোন ধরনের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা ছাড়াই অবাধে চলে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ। সংশ্লিষ্ট সংস্থা নির্বিকার, ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয় পথচারীদের।

স্থানীয়রা বলছেন, যে ডেভেলপিং ফার্ম কাজ করবে তারা প্রথমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। না করলে এটা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। আর, আমরা তো সাধারণ মানূষ। ওদের সাথে শক্তি বা কথা কোনোটাতেই পারবো না। আমরা মনে করি, কর্তৃপক্ষ সচেতন হলেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

আমিরবাগে এ ঘটনার পর বাসিন্দাদের প্রতিবাদের মুখে ভবনটির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় আমিরবাগ হাউজিং সোসাইটি। দুর্ঘটনার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলাতিকে দুষছে কর্মরত শ্রমিকরা।

আমীরবাগ হাউজিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা আর কোনো কাজ এখানে করতে দেবো না।

প্রসঙ্গত, ভয়াবহ এ ঘটনার পরও ঘটনাস্থলে যাননি ডেভেলপার কোম্পানি বায়ো প্রপার্টিজের কেউ। ফোনেও পাওয়া যায়নি। এমনকি ঘটনাস্থলে কোন কথা না বলে সটকে পড়েন দায়িত্বরত ব্যবস্থাপকও।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply