ফটো স্টোরি: জাপানি দম্পতিদের জন্য ক্রিসমাস ২য় ভ্যালেন্টাইনস ডে

|

২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪। আজ সারাবিশ্বে পালিত হবে ক্রিসমাস। অন্যান্য দেশগুলোর জনগণের জন্য এই দিনটি ধর্মীয় দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে, এদিক থেকে রীতিমতো ভিন্ন জাপান। দেশটির দম্পতিদের জন্য ক্রিসমাস একটি রোমান্টিক দিন। অনেকটা, ভ্যালেন্টাইনস ডে-র মতো। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা সংস্কৃতিতে ঐতিহ্যগত পারিবারিক সমাবেশের বিপরীতে, জাপানে ক্রিসমাস দম্পতিদের জন্য একটি বিশেষ উপলক্ষ হয়ে উঠেছে। ছুটির দিনটি, ধর্মীয় ঐতিহ্যে থাকা সত্ত্বেও ভ্যালেন্টাইনস ডে-র মতো উদযাপনে পরিণত হয়েছে। অনেক দম্পতি বড়দিনে জ্বলজ্বলে আলোতে, অভিনব রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়া এবং বিলাসবহুল হোটেলে থেকে উদযাপন করে থাকে দিনটি।

কারণ- জাপানের যুবক-যুবতীরা বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তাদের বাবা-মায়ের সাথে থাকার সংস্কৃতিকে ধরে রাখে এবং সন্মান করে। তাই, দেশটিটে বাড়ির বাইরে ভালবাসার মানুষের সাথে একত্রে সময় কাটানোর একটি বিশেষ দিন বা ট্রিট ডে ক্রিসমাস।

বড়দিনকে কেন্দ্র করে দেশটির বিভিন্ন রেস্তোরাঁ এবং দোকানগুলো বিশেষ ডিনার সেট উন্মোচন করা হয়। সেই সাথে চকলেট থেকে গয়না পর্যন্ত বিভিন্ন উপহারের ওপর ছাড় দেয় ব্যবসায়ীরা।

তরুণ দম্পতিরা বড়দিনে রঙিন আলোর দর্শনীয় আয়োজন দেখার জন্য সন্ধ্যা হয়ে গেলে একসাথে বের হয়। তরুণদের একসাথে রোমান্টিক সময় কাটানোর জন্য ক্রিসমাস একটি বিশেষ দিন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমিরে সেকিনো। তার জন্য সবচেয়ে স্মরণীয় ক্রিসমাসগুলোর মধ্যে একটি হল তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে টোকিওর সেরা ডেটিং স্পটগুলো ঘুরে বেড়ানো।

সেকিনো বলেন, ক্রিসমাসে আমার প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে শিবুয়া স্কাইতে উঠেছিলাম। সেটি মাটি থেকে ৭৫১ ফুট ওপরে অবস্থিত। সেখান থেকে জাপানের রাজধানীর মনোরম দৃশ্য দেখতে দারুণ লাগে। আর সেটি যদি হয় ক্রিসমাসে, তাহলে তো কথাই নেই।

“আমাদের সম্পর্ক হয়েছে এক মাস। প্রথমবারের মতো একসাথে ছিলাম আমরা। তাই আমরা দু’জনই একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু আমি প্রথমবারের মতো তার সাথে এই জায়গাগুলোতে গিয়ে খুব মজা পেয়েছি।” বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সেকিনো।

টোকিওর একটি শপিং এলাকায় এক দম্পতি বড়দিন উপলক্ষে সাজানো আলোর মধ্য দিয়ে হাঁটছেন। ছবি: সিএনএন নিউজ।

আরেকজন ১৯ বছর বয়সী ছাত্র আকাও তাকাও বলেন, চকচকে আলোর ডিসপ্লে দেখতে গত বছর বান্ধবীর সাথে একটি ক্রিসমাস মার্কেটে গিয়েছিলাম। এরপর বান্ধবীর সাথে রেস্টুরেন্টে গরম চকলেট খেয়েছিলাম। মনে হয়েছিলো ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ পালন করছি।ক্রিসমাসের সেই অভিজ্ঞতা চমৎকার।

একজন নারী টোকিও’র আর্ট অ্যাকোয়ারিয়াম মিউজিয়ামে গোল্ডফিশ এবং রঙিন আলোসহ ক্রিসমাস ইনস্টলেশন দেখছেন। ছবি: সিএনএন নিউজ।

পশ্চিমা সংস্কৃতিতে, ক্রিসমাস মানে বছরের সেই সময়, যখন পরিবারের সকল সদস্য মিলে একটি লম্বা টেবিলের চারপাশে জড়ো হয়। একসাথে খাবার খাওয়া এবং জমকালোভাবে মোড়ানো উপহারগুলো খুলে সবাইকে দেখানো। সেই সাথে গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করা।

টোকিও পার্কে ক্রিসমাস লাইটের নীচে সময় কাটাচ্ছে এক দম্পতি। ছবি: সিএনএন নিউজ।

কিন্তু জাপানে, ক্রিসমাস উত্সব দীর্ঘকাল ধরে একটি ভিন্ন মাত্রা ধারণ করেছে। এই দিনটিকে জাপানিজরা বেশ রোমান্টিক দিন হিসেবে গণ্য করে থাকেন। আরেকটি ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসাবে দেখা হয় বললে মন্দ হবে না।

টোকিওর মারুনৌচি ব্যবসায়িক এলাকার চারপাশে সান্তা ক্লজ প্যারেডের পোশাক পরে আনন্দ করছেন জাপানিজ নারী। ছবি: সিএনএন নিউজ।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply