সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা প্রতিনিধি :
উত্তর ভারতে জৈন সম্প্রদায়ের কথিত ভগবান আদিনাথের ‘অভিষেক’ উপলক্ষে একটি ‘লাড্ডু মহোৎসব’-এ ঠিক কাঠের মঞ্চ ধসে কমপক্ষে ৭ জন নিহত হয়েছেন। এতে আরো ৭৫ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ড এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানী নয়াদিল্লির উত্তরে বাগপত জেলায় এই ঘটনা ঘটে। জৈন ধর্মের শত শত ভক্ত মিষ্টান্ন নৈবেদ্য প্রদানের জন্য একটি মন্দিরে জড়ো হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় এক কর্মকর্তা।
মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে কোটি কোটি মানুষের ভিড় হয়েছিল প্রয়াগরাজে। বুধবার ত্রিবেণী সঙ্গমে ‘অমৃত স্নান’ করতে জড়ো হয়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই পুণ্যার্থীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আচমকা ধাক্কাধাক্কি শুরু হওয়ায় ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়েন অনেকে। দুর্ঘটনার পর পরই উদ্ধার কাজ শুরু হয়। নিহত ও আহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে মেলা প্রাঙ্গণেরই হাসপাতালে আনা হয়।
মেলার প্রাঙ্গনের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অনেককেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। সংখ্যাটা ১৫এর বেশি। ত্রিবেণী সঙ্গমে মৌনী অমাবস্যায় স্নান করতে দূরদূরান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা ভিড় করেছিলেন মহাকুম্ভে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রয়াগরাজে ভিড় বাড়তে থাকে। প্রশাসনের তরফে বার বার ঘোষণা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তরে বাগপত জেলার ম্যাজিস্ট্রেট অস্মিতা লাল বলেন, একটি কাঠের তৈরি মঞ্চ ধসে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৭৫ আহত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তাদের মধ্যে ৩০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়িতে পাঠানো হয়।
এনডিটিভি নিউজ নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, জৈন দেবতা আদিনাথের মুক্তি উপলক্ষে প্রতি বছর উৎসবের সময় এই কাঠের মঞ্চটি তৈরি করা হয়। রাকেশ জৈন নামে এক ভক্ত বলেন, পুরোহিতরা লাড্ডু (মিষ্টি) দিতে মঞ্চে যান এমন সময় শত শত ভক্তসহ কাঠের মঞ্চটি ভেঙে পড়ে।
দুর্বল ভিড় ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা ত্রুটির কারণে ভারতের প্রধান ধর্মীয় উৎসবগুলোতে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
গত ১৯ জানুয়ারি কুম্ভমেলায় আগুন ছড়িয়েছিল। ১৯ নম্বর সেক্টরে গীতা প্রেসের তাঁবু জ্বলে উঠেছিল দাউদাউ করে। সেখান থেকে আশপাশের কিছু তাঁবুতেও আগুন ছড়ায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫০ টিরও বেশি তাঁবু। তাঁবুগুলির ভিতর থেকে পর পর সিলিন্ডার ফাটার শব্দও পাওয়া যাচ্ছিল। মহাকুম্ভ উপলক্ষে প্রয়াগরাজে এই মুহূর্তে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর ভিড়।
বিস্তীর্ণ মেলাপ্রাঙ্গণকে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সর্বক্ষণ মোতায়েন রয়েছেন দমকলকর্মীরা। অগ্নিকাণ্ডের পর পদপিষ্টের ঘটনা কুম্ভমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর উত্তরপ্রদেশের একটি ধর্মীয় সমাবেশ পদদলিত হয়ে ১২১ জন নিহত হয়। ২০১৬ সালে দক্ষিণ কেরালা রাজ্যের একটি মন্দিরে হিন্দু নববর্ষ উপলক্ষে নিষিদ্ধ আতশবাজি প্রদর্শনের সময় এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে আরো ১১২ জন মারা যান।
/এআই
Leave a reply