বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইলেকট্রনিক্স চুক্তিভিত্তিক উৎপাদনকারী কোম্পানি ফক্সকন এইচসিএল গ্রুপের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে একটি সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট নির্মাণের অনুমোদন পেয়েছে। প্রায় ৩ হাজার ৭শ’ কোটি রুপি (৪৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ব্যয়ে কারখানাটি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ভারতের মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এক প্রতিবেদনে ইউএস সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব স্থানীয় সময় বুধবার (১৪ মে) মন্ত্রিসভায় এক ব্রিফিংয়ে জানান, ২০২৭ সালের মধ্যে এই প্ল্যান্ট চালু হবে। বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে অ্যাপলের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (ফক্সকনসহ) ক্রমশ চীন ছেড়ে ভারতের দিকে ঝুঁকছে।
বৈষ্ণব বলেন, এই প্ল্যান্টে ফক্সকনের ডিসপ্লে ড্রাইভার চিপ তৈরি হবে—যেগুলো মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, অটোমোবাইল, পিসি এবং অন্যান্য কনজিউমার ইলেকট্রনিক্সে ব্যবহৃত হয়। তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী উপস্থাপনা অনুযায়ী, প্ল্যান্টটি মাসে ২০,০০০ ওয়েফার এবং ৩৬ মিলিয়ন ডিসপ্লে ড্রাইভার চিপ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। ওয়েফার হলো সিলিকন দিয়ে তৈরি পাতলা, গোলাকার সেমিকন্ডাক্টর উপাদান, যা চিপের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
মূলত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন-বিরোধী শুল্কের কারণে অ্যাপল তার আইফোন উৎপাদনের বড় অংশ চীন থেকে ভারতের দিকে সরিয়ে নিচ্ছে। বার্নস্টেইন অ্যানালিস্টদের মতে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ মোট আইফোন উৎপাদনের ১৫-২০% ভারতে হতে পারে। এভারকোর আইএসআই-এর হিসাবে, বর্তমানে ১০-১৫% আইফোন ভারতে অ্যাসেম্বল করা হয়।
গত মাসে অ্যাপলের স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো ট্রাম্পের ‘পারস্পরিক শুল্ক’ থেকে অব্যাহতি পেলেও কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে এটি সাময়িক হতে পারে। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট পণ্যের আমদানি নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা তদন্ত করছে, যার ফলাফল হতে পারে নতুন শুল্ক।
ট্রাম্পের শাসনামলে চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ৩০% অতিরিক্ত শুল্ক দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই হার ১০%।
/এআই
Leave a reply