স্ক্রিনের সামনে সারাদিন বসে থাকলে চোখের যত্ন নেবেন যেভাবে

|

যদি আপনার কাজ দিনের বেশিরভাগ সময় স্ক্রিনের সামনে বসে থাকা হয়, তাহলে আপনার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ই-মেইল, ভিডিও কল এবং স্প্রেডশিটে সারাদিন কাজ করার পর মাথাব্যথা, চোখে অস্বস্তি কিংবা দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে্‌ স্ক্রিনের সামনে সারাদিন বসে কাজ করার পর কীভাবে চোখের যত্ন নিবেন?

যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার উইলস আই হাসপাতালের ডাক্তার ডগলাস উইসনার বলেন, ‘এটি ডিজিটাল সমাজের একটি পেশাগত ঝুঁকি।’

স্ক্রিনের দিকে তাকালে দৃষ্টি ঝাপসা হয় কেন?

ম্যাসাচুসেটস আই অ্যান্ড ইয়ার হাসপাতালের ভিশন রিহ্যাবিলিটেশন ডিরেক্টর অ্যামি ওয়াটস দুটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন:

১. চোখের পলক কম পড়া: স্ক্রিনে ফোকাস করলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০% কম পলক পড়ে, ফলে চোখের ভেতরের পানি শুকিয়ে যায়।

২. চোখের পেশির ক্লান্তি: একটানা ফোকাস করলে চোখের পেশিগুলো ক্লান্ত হয়ে পড়ে, যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়।

এছাড়াও, দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রিনে কাজ করলে মাথাব্যথা, চোখ লাল হওয়া, চুলকানি কিংবা ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।

ডিজিটাল আই স্ট্রেইন কমাতে করণীয়:

  • ২০/২০/২০ রুল মেনে চলুন: প্রতি ২০ মিনিট পরপর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কোনো বস্তু দেখুন। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, প্রতি ঘণ্টায় ৫ মিনিটের বিরতি আরও কার্যকর।
  • চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন: প্রিজারভেটিভ-মুক্ত আই ড্রপ ব্যবহার করলে চোখের শুষ্কতা কমবে।
  • পর্যাপ্ত আলো ও পরিষ্কার স্ক্রিন: কম আলো বা নোংরা স্ক্রিন চোখের ওপর চাপ বাড়ায়।
  • রাতে স্ক্রিন ব্যবহার কমালে ঘুমের উন্নতি হতে পারে। সেই সাথে, চোখের জন্য উপকারী।

ডা. উইসনারের মতে, ‘শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ এভাবে চোখ ব্যবহার করেনি। আমাদের শরীর এজন্য অভ্যস্ত নয়। তাই নিয়মিত বিরতি নেয়া এবং চোখের যত্ন নেয়া জরুরি।’

এছাড়াও বাসায় শিশুরা যদি চোখে ব্যথা কিংবা ঝাপসা দেখছে বলে জানায়, তাহলে বাবা-মায়ের উচিত বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে নেয়া। বাচ্চাদের চোখে অস্বস্তি বা ঝাপসা দৃষ্টি হলে কিংবা দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের ব্যবহার শিশুদের মায়োপিয়া রোগ বাড়াতে পারে। মায়োপিয়া বা ক্ষীণদৃষ্টি একটি সাধারণ চোখের সমস্যা, যেখানে দূরের বস্তু ঝাপসা দেখা যায়, কিন্তু কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখা যায়। বর্তমানে স্ক্রিনের ব্যবহার বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের কারণে মায়োপিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষত শিশু ও তরুণদের মধ্যে।

তাই স্ক্রিন টাইম যতটুক সম্ভব কমানো উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা। সেই সাথে, চোখকে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম দিন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply