পুরান ও ক্লাসেনের অবসর: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কতটা ক্ষতি?

|

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন নিকোলাস পুরান ও হেনরিখ ক্লাসেন। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুজনেই অবসর ঘোষণা করেন। যদিও তাদের বিদায় শোনা মাত্র খুব একটা ‘সাইসমিক শক’ হয়নি, তবুও তারা যে টি-টোয়েন্টি যুগের অন্যতম ভয়ঙ্কর মিডল অর্ডার ব্যাটার ছিলেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

২০২৩ সালে পুরান এক ক্যালেন্ডার বর্ষে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড গড়েন। তিনি ১৭০টি ছক্কা হাঁকান, যা ক্রিস গেইলের ২০১৫ সালের রেকর্ড (১৩৫ ছক্কা) ছাড়িয়ে যায়। যদিও পুরান গেইলের চেয়ে ৩৮টি বেশি ইনিংস খেলেছিলেন, তবুও রেকর্ডটি তাৎপর্যপূর্ণ। একই বছর ক্লাসেন মারেন ১০৫টি ছক্কা। এই তালিকায় গেইল ছাড়া আর কেউ নেই, যা দেখায় এ দুজন কী লেভেলের খেলোয়াড়।

তবে তারা অবসর নিলেও ক্রিকেট ছাড়ছেন না। পুরান এখনই নামছেন এমআই নিউইয়র্কের অধিনায়ক হয়ে, ক্লাসেনও খেলবেন সিয়াটল অর্কাসের হয়ে। ফলে এটি এক ধরনের ‘কুইট কুইটিং’। তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আরও অর্থপূর্ণ ও লাভজনক ক্রিকেটে মন দিচ্ছেন।

তাদের অবসর আসলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্কটই তুলে ধরছে। ক্লাসেন ১১৮টি সাদা বলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন, যার মাত্র ২৩টি ছিল আইসিসি ইভেন্টে। পুরান খেলেছেন ১৬৭ ম্যাচ, যার মধ্যে মাত্র ২৪টি ছিল বিশ্বকাপ বা বড় ইভেন্টে। অর্থাৎ, ৮০-৮৬ শতাংশ ম্যাচই ছিল অর্থহীন ও গুরুত্বহীন।

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোয় খেলার মাধ্যমে তারা যেমন বেশি অর্থ পাচ্ছেন, তেমনি কম খেলেই বেশি অর্জন করছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বোর্ডগুলো এখন আর তাদের ধরে রাখতে পারছে না। কারণ, তাদের দেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই।

তাদের বিদায়ে বোঝা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে এমন সিদ্ধান্ত আরও আসবে। যদিও তারা কোহলির চেয়ে খুব বেশি ছোট নয়, তবুও তাদের মতো ক্রিকেটারদের সংখ্যা বাড়বে। আন্তর্জাতিক সাদা বলের ক্রিকেট এখন আর বড় আকর্ষণ নয়, বরং ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই ভবিষ্যৎ দেখছেন ব্যাটাররা।

/এমএমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply