
২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে ইরানে চারটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এবং দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব শহর চাবাহার-এ নতুন স্পেসপোর্ট চালু করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইরানি স্পেস এজেন্সির প্রধান হাসান সালারিয়েহ।
হাসান সালারিয়েহ স্থানীয় সময় রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছেন, ‘চাবাহার স্পেসপোর্টের উন্নয়ন ভালোভাবে এগোচ্ছে এবং আমরা শীঘ্রই এই স্থলবেস থেকে প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রত্যাশা করতে পারি।’
হাসান সালারিয়েহ আরও জানান, মধ্য-মার্চের মধ্যে দেশটি চারটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে, যার মধ্যে রয়েছে জাফর, পায়া, কওসার স্যাটেলাইটের দ্বিতীয় মডেল—এটি একটি পৃথিবী পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট; যা বেসরকারি খাতে ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে—এছাড়া সোলাইমানি ন্যারোব্যান্ড স্যাটেলাইট কনস্টেলেশন-এর পরীক্ষামূলক মডেল।
সালারিয়েহ যোগ করেছেন, ‘অন্তত এই বছরের শেষের মধ্যে এই উৎক্ষেপণগুলো সম্পন্ন হবে।’
গত মাসে সালারিয়েহ তাসনিম নিউজকে বলেছেন, ইরান ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নতুন সোলাইমানি কনস্টেলেশন থেকে প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার পরিকল্পনা করছে।
এই কনস্টেলেশনটির নামকরণ করা হয়েছে কাসেম সোলাইমানি-এর নামে, যিনি ইরানের কুদস ফোর্সের প্রাক্তন কমান্ডার ছিলেন এবং ২০২০ সালে বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন।
পশ্চিমা সরকারগুলো বারবার ইরানের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সতর্কবার্তায় পশ্চিমা দেশগুলো জানায়, একই ধরনের রকেট প্রযুক্তি ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে তেহরান পশ্চিমা অভিযোগ নাকচ করে বলছে, তাদের মহাকাশ প্রকল্প সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।
২০১৯ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ) একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ইরানের মহাকাশ উৎক্ষেপণ প্রযুক্তির দক্ষতা ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) উন্নয়নের পরীক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।’
ইউএস-দ্বারা মধ্যস্থতা করা ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই করে ইরান। ঠিক এক মাস পরে, ইরান তাদের নিজস্ব নাহিদ-২ টেলিকমিউনিকেশন স্যাটেলাইট রাশিয়ার সয়ুজ রকেটে উৎক্ষেপণ করে কক্ষপথে প্রেরণ করে।
জানুয়ারি ২০২৪-এ ইউরোপীয় ত্রয়ী—ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি—ইরানের ‘সোরায়া স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের নিন্দা জানায় এবং সতর্ক করে যে, ‘এটি দীর্ঘ-পরিসরের ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।’
এ ধরনের উৎক্ষেপণ ইরানকে এমন প্রযুক্তি পরীক্ষা করার সুযোগ দেয় যা তাদের ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রোগ্রামকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, এই ধরনের কার্যক্রম আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ।
সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
/এআই



Leave a reply