Site icon Jamuna Television

প্রবাসে পাঠানোর লোভ দেখিয়ে দেহ ব্যবসা!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

গ্রামের দরিদ্র নারীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মেডিকেল করার কথা বলে ঢাকায় বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে রেখে দেহ ব্যবসা করানোর অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদ পুকুরিয়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম সিরাজের বিরুদ্ধে।

ঘটনার ভুক্ত ভোগী আসমা নামে এক নারী সিরাজের বিচার চেয়ে গত ১৫ ই সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ সদর থানায় এক অভিযোগ দায়ের করেছে।

ভুক্তভোগী নারী জানায়, সিরাজের ভাগ্নি পরিচয়ে পারভিন নামের এক নারী ঝিনাইদহ ঝিনুক মালা আবাসনে বসবাস করে। এই বসবাসের সূত্র ধরে সে মহিলাদের সিরাজের মাধ্যমে বিনা টাকায় সৌদি আরব পাঠাবে বলে ঝিনাইদহের টিটিসিতে ভর্তি করে এক মাসের প্রশিক্ষক দেয়। প্রশিক্ষকের পর সিরাজ তাদের মেডিকেল করার জন্য ঢাকায় নিয়ে যায়। মেডিকেল করার পর ধরা পড়ে যে আসমা প্রায় ৪ মাসের গর্ভবতী। এই অবস্থায় আসমার সাথে থাকা ৪ নারীকে ঢাকায় আবাসিক হোটেলে অন্যদের সাথে রাখার প্রস্তাব দেয়। তার এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে ফিরে আসে ৩ নারী। ফিরে আসার পর সিরাজ ঐ নারীদের নিকট প্রবাসে না গেলে খরচের টাকা পয়সা ফেরত চায়।

আসমা কে চাপ দিয়ে থাকে যে হয় তার খরচের ২৫ হাজার টাকা ফেরত দিতে হবে নইলে পেটের বাচ্চা নষ্ট করে বিদেশ যেতে হবে। তা না করলে তার বিপদ আছে । সিরাজের ভঁয়ে আসমা ঝিনাইদহ শহরের হামদহ এলাকায় বসবাস রত আয়েশা নার্সের নিকট গিয়ে ওষুধের মাধ্যমে সেই বাচ্চা নষ্ট করে আসামা প্রচণ্ড রকমের অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আসমা বুঝতে পারে যে বিদেশে যাওয়ার চেয়ে তার সন্তানের মূল্য অনেক বেশী। তখন আসমা ঝিনাইদহ সদর থানায় সিরাজের বিচার চেয়ে অভিযোগ করে।

সিরাজের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা মেডিকেল করতে যাওয়া আরভিনা নামের এক নারী জানায়, যে সিরাজ তাদের বিদেশে পাঠানর কথা বলে ঢাকায় মেডিকেল করতে নিয়ে এসে আবাসিক হোটেলে রেখে কুপ্রস্তাব দেয়। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে তাদের সে বিদেশে পাঠায় না। তাই তারা ফিরে এসেছে। তারা তার মাধ্যমে বিদেশে যাবে না। যারা তার প্রস্তাবে রাজি হয় তাদের দিয়ে আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসা করায়ে পরে সৌদি আরব পাঠায়।

ঝিনাইদহ মালা আবাসন প্রকল্পের ইসরাইল বলে যে আসমার একটি বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে যাহা আবাসনের গোরস্তানে কবর দেয়া হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে বাদ পুকুরিয়া গ্রামের সিরাজের নিকট জানতে চাইলে সে ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলে যে আমি ঢাকায় একটি এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে কাজের মহিলাদের পাঠায়। যারা যায় তাদের নিকট থেকে কোন টাকা নেওয়া হয় না। তাছাড়া বিদেশে তাদের পাঠানোর প্রক্রিয়া হিসাবেই মেডিকেল করতে হয়। ঝিনাইদহ থেকে যেয়ে একদিনে ঢাকা থেকে মেডিকেল করে ফিরে আসা সম্ভব না তাই তাদের কোথায় রাখব। তখন কোন না কোন আবাসিক হোটেলে রাখতে হয়। শুধু তারা না আমি প্রায় ৪০ জনের অধিক লোক পাঠিয়েছি এই ধরনের কোন অভিযোগ আসে নাই। মূলত আরভিনা নামের মেয়েটা অন্য একজনের মাধ্যমে সৌদি আরবে যাবে যেখান থেকে সে আরও ১০ হাজার টাকা পাবে। সেই টাকা আমার নিকট চেয়েছিল আমি দেইনি বলে তার সকল কাগজ পত্র ফেরত চায়। আমি ফেরত দেয়নি বলে মানসিক প্রতিবন্ধী আসমা কে দিয়ে এই সকল করাচ্ছে। আমি নিজে টাকা দিয়ে তাদের পাসপোর্ট সহ ঢাকায় মেডিকেলের জন্য নিয়ে গেছি। আমি একটি কাজের শ্রমিক সৌদি আরব পাঠালে এজেন্সি আমাকে ৭০ হাজার টাকা দেয়।

ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ অভিযোগ পেয়েছে বলে জানায় যে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে মামলা করে সিরাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version