Site icon Jamuna Television

‘ফতুর’ হওয়ার পথে ফতুল্লা স্টেডিয়াম

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হুমকির মুখে দেশের অন্যতম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। লিংক রোডের প্রধান ফটক পার করে স্টেডিয়ামে যেতে পায়ে হাঁটা মাত্র তিন মিনিটের পথের পুরোটাই পানির নিচে। আউটার স্টেডিয়ামের মাঠের চারদিকে জলাবদ্ধতা আর জলজ উদ্ভিদ দেখে মনে হতে পারে, স্টেডিয়াম যেন দ্বীপ। বুধবার সরেজমিন দেখা যায় স্টেডিয়ামের ভয়াবহ চিত্র। স্টেডিয়ামের লিংক রোড সংলগ্ন গেট দিয়ে প্রবেশের মুখে আবর্জনার স্তূপ। লিংক রোড ও স্টেডিয়ামের মাঝে পানি নিষ্কাশনের খাল ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। স্টেডিয়ামের কমেন্ট্রি বক্স ও অন্যান্য স্থাপনার কাচের জানালা ভাঙাচোরা। গ্যালারির দর্শকদের রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার ছাউনি কবে ভেঙে গেছে তা হয়তো ভুলেই গেছে কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ এমন যে বাইরে থেকে ভেতরে প্রবেশ করার সময় যে কারও কাছে মনে হবে এটি একটি পরিত্যক্ত জায়গা। বাইরে প্র্যাকটিস করার জায়গার অবস্থা আরও খারাপ। বৃষ্টির পানি ও ডিএনডি খালের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্প কারখানার কেমিক্যালমিশ্রিত পানিতে এই জায়গা এখন ডোবা-নালায় পরিণত হয়েছে। গেট পার করে স্টেডিয়ামে যেতে পায়ে হাঁটা তিন মিনিটের পথ পুরোটাই পানির নিচে। বছরের পর বছর এভাবেই আটকে আছে পানি। চরম দুর্গন্ধে টেকা দায়। জমে থাকা পানি পোকামাকড় আর মশার অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, ২৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম ২০০৬ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশ ও কেনিয়ার ওডিআই দিয়ে যাত্রা শুরু করে। একই বছরের ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ও ভারতের ওডিআই ম্যাচের মাধ্যমে শেষ হয় এর ওডিআই পরিভ্রমণ! ২০০৬ সালের ৯-১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ম্যাচের মাধ্যমে শুরু হয় টেস্টের ইতিহাস। ২০১৫ সালের ১০-১৪ জুন বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট দিয়ে শেষ হয় এই স্টেডিয়ামের টেস্ট ম্যাচের ইতিহাস। এখনও আন্তর্জাতিক টি ২০ ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। বর্তমানে মাঠটিতে দু’একটি ক্লাব ও বিভিন্ন টুর্নামেন্টের খেলা ছাড়া আর কোনো খেলা হয় না। নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত না হওয়ায় মাঠটির দেখভাল হয় না। অবহেলায় পড়ে থাকতে থাকতে এখন মাঠটি পুরোপুরি আন্তর্জাতিক ম্যাচের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো একসময় একেবার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে।

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, মাঠটি নির্মাণের সময় বড় ধরনের ভুল করা হয়েছে। মাঠের জায়গা একসময় জলা ছিল। ডিএনডির ভয়ংকর জলাবদ্ধতার মধ্যে এটি পড়েছে। নির্মাণের সময় আশপাশে বসতবাড়ি বেশি না

থাকলেও এখন বসতবাড়ির পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান। ফলে অন্যান্য জায়গা থেকে জায়গাটি নিচু হয়ে গেছে। এ অবস্থায় যে ক্যানেল দিয়ে এই মাঠের পানি নিষ্কাশন হওয়ার কথা এখন সেই খাল দিয়েই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকা। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত স্টেডিয়ামের পাশে ময়লা অপসারণ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা এবং নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করা হোক।

Exit mobile version