Site icon Jamuna Television

স্ত্রীর লিভারে স্বামী বুলবুলের নতুন জীবন!

বগুড়া ব্যুরো
অকেজো লিভার প্রতিস্থাপনের অপেক্ষার সঙ্গে মৃত্যুর প্রহর যেনো এগিয়ে আসছিলো বগুড়ার জামিলুর রহমান বুলবুলের। শেষমেষ স্ত্রী মাকসুদা জাহান নূপুরের লিভারের অংশ নিজের শরীরে প্রতিস্থাপনের পর দুবছর পর নতুন জীবনের স্বাদ পেলেন তিনি। সম্প্রতি ভারতের চেন্নাইয়ে এই লিভার প্রতিস্থাপনের অস্ত্রপচার শেষে দেশে ফিরেছেন এই দম্পতি।

সোনাতলা উপজেলার মাদারীপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী জামিলুর রহমান বুলবুল জানান, বছর দুয়েক আগে লিভারের প্রদাহে আক্রান্তে হন তিনি। দেশে নানানভাবে চিকিৎসা শেষে ভারতে যাবার পর জানা যায় তার লিভার সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে, প্রতিস্থাপন ছাড়া বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রতিস্থাপনযোগ্য লিভার না পাওয়ায় দিন দিন অবণতির দিকে যাচ্ছিলো বুলবুলের শারীরিক অবস্থা। পরে স্ত্রী মাকসুদা জাহান নূপুরের আগ্রহে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে স্বামী-স্ত্রীর টিস্যু মিলে যাওয়া আশার আলো দেখেন এই দম্পতি।

গেলো ১৮ আগস্ট ভারতের চেন্নাইয়ে অ্যাপলো হাসপাতালের চিকিৎসকরা বুলবুলের লিভার প্রতিস্থাপনের জটিল অস্ত্রপচার সম্পন্ন করেন। অস্ত্রপচারে অকেজো লিভার সরিয়ে স্ত্রী নূপুরের লিভারের একটি অংশ কেটে স্থাপন করা হয় সেখানে। বাকি চিকিৎসা শেষে গেলো শুক্রবার দেশে ফিরেছেন এই দম্পতি।

মাকসুদা জাহান নূপুর জানান, প্রায় ১৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে এই অস্ত্রপচারে, খরচ হয়েছে প্রায় ৫১ লাখ টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত স্বামী সুস্থ হয়ে ফিরেছেন এতেই তিনি সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ। এই দম্পতির সংসারে জাইমা রহমান ইলা (১১) এবং নাবিল রহমান নূর (৯) নামে দুই সন্তান রয়েছে।

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাক্তার রেজাউল আলম জুয়েল যমুনা নিউজকে জানান, রক্তের সম্পর্ক ছাড়া লিভার প্রতিস্থাপনে টিস্যু মিল হওয়া হওয়া খুব-ই বিরল ঘটনা। এ ধরনের অস্ত্রপচারে পুরো লিভার নয় প্রতিস্থাপন করতে হয় না। সুস্থ লিভারের ছোট্ট একটি অংশ কেটে রোগীর লিভারে প্রতিস্থাপন করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুজনের দেহেই লিভার নতুন করে তৈরি হয়। কেটে নেয়া অংশই একসময় রোগীর স্বতন্ত্র লিভারে রূপ নেয়। ব্যয়বহুল হলেও, বাংলাদেশেও লিভার প্রতিস্থাপনের অস্ত্রপচার শুরু হয়েছে বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

Exit mobile version