Site icon Jamuna Television

ভিসির পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের উল্লাস

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের খবরে উল্লাস প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ১২ দিনের আন্দোলন সফল হওয়ায় একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা। কেউ কেউ রঙ মেখে আনন্দের প্রকাশ ঘটান।

নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অন্যায় আচরণের অভিযোগ ছিল ভিসি নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে। পরিবারের ২০ জনের অধিক আত্মীয়-স্বজনকে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে চাকরি দিয়েছেন। এর মধ্যে নিজের ভাগ্নী জামাই এবং ভাতিজাকে করেছেন শিক্ষক। বিগত ৫ বছরে অতিরিক্ত মূল্যে ভর্তি ফরম বিক্রি করে প্রায় ২০ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েই প্রথমে ‘ভিসি কোটা’ চালু করে শিক্ষাথী ভর্তির অভিযোগও আছে। পরে চাপের মুখে তিনি ভিসি কোটাকে ‘বিশেষ কোটা’য় পরিণত করা হয়।

সামান্য অপরাধে শিক্ষার্থীদের কড়া শাসন ও বহিষ্কারের একাধিক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। সবশেষ, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্রে করে গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ও ডেইলি সানের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিস্কার করেন ভিসি। এ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে। উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে টানা আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।

ভিসির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তাদের প্রতিবেদনে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। ভিসিকে অপসারণের সুপারিশও করেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর কাছে সাদা কাগজে লিখিত পদত্যাগপত্রটি জমা দেন (বশেমুরবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। পরে সেটি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ভিসির বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে টানা আন্দোলন, একপর্যায়ে সংহতি জানিয়ে ৩ জন সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ, সবশেষে ভিসির পতন। শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে একজন শিক্ষকের চূড়ান্ত ব্যর্থতা।

Exit mobile version