Site icon Jamuna Television

একাই লড়ছেন সৈকত

তানভীর হাসান সৈকত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য। ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে নির্বাচিত এই সৈকত লড়ছেন গণরুম সংকট সমাধানে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিয়েছেন ৬ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিও। ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সেসময় আশ্বাস দিলেও পূরণ হয়নি একটি দাবিও। যার প্রতিবাদে নিজের বৈধ সিট ছেড়ে গণরুমে উঠেন সৈকত। নিজের রুমে গণরুমের চারটি ছেলেকে তুলে দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক সংকটের ফল এই গণরুম ব্যবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে নেতাদের এককভাবে রুম দখলে রাখা, তাদের আশ্রয়ে বহিরাগতদের হলে অবস্থান করায় সংকট আরো প্রকট হয়েছে। হল প্রশাসন বারবার উদ্যোগ নিয়েও সমস্যা সমাধান করতে পারেনি। এনিয়ে ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝেও।

আবাসন সংকটের কারণে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় খোলা বারান্দায়। এতে বর্ষা ও শীত মৌসুমে বেশ বেকায়দায় পড়েন তারা। তীব্র শীতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় তিনবছর আগে মারা যান এই হলের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজ মোল্লা।

এছাড়া অন্যান্য হলগুলোতেও আটজনের একটি রুমে ৪০ থেকে ৫০ জন করে থাকতে হচ্ছে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের।

ডাকসু ও হল নির্বাচনে প্রায় সব প্রার্থীই গণরুম সংকট সমাধানের কথা বলেছিলেন। অভিযোগ আছে, কেউ কেউ মিডিয়ায় গণরুম সমস্যা নিয়ে বক্তব্য রাখলেও দৃশ্যত সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেননি অধিকাংশই। সে জায়গায় ব্যতিক্রম তানভীর হাসান সৈকত। ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা সৈকত প্রথম আলোচনায় আসেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে। গত বছরের ৮ এপ্রিল রাতে পুলিশের পিটুনিতে আহত ও আটক হয়েছিলেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় থেকে শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন সৈকত। পরে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ডাকসুতে সদস্য নির্বাচিত হন।

গণরুম সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা সৈকত আগামীকাল সকাল সাড়ে ১১টায় রাজু ভাস্কর্যে ছাত্র সমাবেশের ডাক দিয়েছেন।

জানতে চাইলে তানভীর হাসান সৈকত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মূল সমস্যা এই আবাসন সংকট। এনিয়ে কাজ করছি। প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছি। ভিসি আমার দেয়া দাবিগুলো প্রোভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি। কিন্তু কোনো দাবি এখনো পূরণ হয়নি। তাই ছাত্র সমাবেশের ডাক দিয়েছি। আমি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সমাবেশে আহ্বান জানিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধান হয়নি। আরেকটি নতুন ব্যাচ আসলে এই সমস্যা আরো প্রকট হবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুম সমস্যার সমাধান করে নতুন শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভর্তি করানো।

Exit mobile version