Site icon Jamuna Television

জাবি উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে আচার্যের কাছে চিঠি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ চেয়ে আচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ফ্যাক্স যোগে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’-এর পক্ষ থেকে সমন্বয়ক অধ্যাপক রাইহান রাইন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, উন্নয়ন প্রকল্পের ১৪৪৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা আমাদের জন্য আনন্দের। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে যখন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করে প্রশাসন তখনই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। কোন প্রকার আলোচনা না করেই এমন অপরিকল্পিত হল নির্মাণ ও প্রাণ- প্রকৃতি ধ্বংস করার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দুটি দাবি মেনে নেয় প্রশাসন। দাবি মেনে নেওয়ার মধ্যেই নিশ্চিত হয় যে আন্দোলন যৌক্তিক। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে অভিযোগ ওঠে উপাচার্য দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন। তখন আন্দোলন রূপ নেয় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’- এর ব্যানারে।

এই প্ল্যাটফর্ম থেকে উপাচার্যকে দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচার দাবি করা হয়। ইতোমধ্যে দুই ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ ফাঁস হয় ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং দুই সহ সভাপতি গণমাধ্যমে স্বীকারোক্তি দেয়। তারপরই উপাচার্যকে পদত্যাগ করার জন্য পয়লা অক্টোবর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়। যেহেতু উপাচার্য পদত্যাগ করেনি; তাই আমরা উপাচার্যের অপসারণে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, উপাচার্য শুধু একটি পদ নয়। এটা একটি নৈতিক ভিত্তির উপর দাড়িয়ে। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী ক্ষমতার প্রধান তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এমন অভিযোগের পর উপাচার্যের পদে থাকার কোন নৈতিক ভিত্তি নেই। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। এ কারণে আমরা দ্রুত সময়ে তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনার উদঘাটন চাই। ইতোমধ্যে উপাচার্য নিজেও তদন্তের দাবি করেছেন। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় উপাচার্যসহ আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদেরকেও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে রাষ্ট্রের আইনে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেয় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর ব্যানারে আন্দোলন করা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আল্টিমেটাম শেষ হলে গত ২ ও ৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন করেন তারা। দুই দিনের ধর্মঘট শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।

পরবর্তী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১০ অক্টোবর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন, ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা, ১৬ অক্টোবর বিক্ষোভ মিছিল, ১৭ অক্টোবর সংহতি সমাবেশ এবং ১৮ অক্টোবর মশাল মিছিল।

Exit mobile version