Site icon Jamuna Television

নুসরাত হত্যা মামলার আদ্যোপান্ত

ফেনী প্রতিনিধি
২৭ মার্চ : সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
৬ এপ্রিল : ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেদিন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
৮ এপ্রিল : এজহার নামীয় আসামি ৮ জন, ও অজ্ঞাত বোরকা পরা ৪ জন ও তাদের সহযোগীদের আসামী করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
১০ এপ্রিল : মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ৫ দিন পর রাত সাড়ে ৯ টায় মারা যায় নুসরাত। মামলা পিবিআইকে হস্তান্তরও করা হয় ওইদিন। একইদিন দায়িত্বে অবহেলায় সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেমকে প্রত্যাহার হয়।
১১ এপ্রিল : এলাকার সামাজিক কবরস্থানে নুসরাতকে দাফন। তার জানাযায় হাজারো মানুষের ঢল নামে।
১২ এপ্রিল : নুর উদ্দিন ও শামীমকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে হত্যার রহস্য উম্মোচন হতে থাকে। এরপর একের পর এক আসামীরা গ্রেপ্তার হতে থাকে। মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও পিবিআই। এরমধ্যে ৫ জন পওে (১০ জুন) খালাস পায়।
১০ মে : সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেমকে সাময়িক বহিস্কার। (এছাড়া একই অভিযোগে এসআই ইউসুফ এবং ইকবাল সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।)
১৩ মে : দায়িত্বে অবহেলায় ফেনীর এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে ফেনী থেকে প্রত্যাহার। তিনি ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষাবলম্বন করে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি লিখেছেন।
২৮ মে : ১৬ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম। প্রায় ৮০৮ পৃষ্ঠার সামগ্রিক নথিটি ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে দাখিল করেন। এটি তার এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় তিনি ৩০ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে হস্তান্তর করেন।
১০ জুন : চার্জশিট গ্রহণ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানাল, বিচারক মামুনুর রশীদ।
১৬ জুন : ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে রাজধানীর শাহবাগ থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপি পুলিশ। বর্তমানে ওসি মোয়াজ্জেম জেলহাজতে রয়েছে।
২০ জুন :১৬ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মধ্য দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
২৭ জুন : থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষি নুসরাতের বড় ও মামলার বাদি মাহমুদুল হাসান নোমান।
২৭ আগস্ট : বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি একমাত্র ঘটনা সাক্ষ্য হিসেবে আদালতে অডিও-ভিডিও প্রদর্শন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম।
১১ সেপ্টেম্বর : যুক্তিতর্ক শুরু।
৩০ সেপ্টেম্বর : মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ হয়।
অভিযোগ আমলে নেয়ার পর ৬১ কার্যদিবস।

চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি ও মাদরাসার সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), মহিউদ্দিন শাকিল (২০) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।

১৬ জন আসামির মধ্যে ১২ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। যারা দেননি তারা হচ্ছে, মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর, আবছার উদ্দিন, রুহুল আমিন, মোহাম্মদ শামীম। কিলিং মিশনে যে পাঁচজন অংশ নেন তারা হচ্ছে, ১. শাহাদাত হোসেন শামীম, ২ জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত ৩ সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের ৪ উম্মে সুলতানা পপি, ৫ কামরুন নাহার মনি।

Exit mobile version