Site icon Jamuna Television

কুড়িগ্রামে ১০ মাসে ৩৪ খুন!

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম এখন খুনের ঘটনায় অশান্ত হয়ে উঠছে। গত দশমাসে এই জেলায় ৩৪টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক অবক্ষয়,মাদক, আকাশ সংস্কৃতি, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়াকে দায়ী করছেন সুশীল সমাজ।

দেশের উত্তরের শান্ত প্রতিকৃতির জেলা খ্যাত কুড়িগ্রাম। এই জেলায় রয়েছে ১৬টি নদ-নদীসহ ভারতের তিন রাজ্যের প্রায় ৩শ কি.মি. সীমান্ত এলাকা। জেলার ৯ উপজেলার প্রায় ২৫লাখ মানুষের বসবাস। সাম্প্রতিক সময়ে কুড়িগ্রামে দুটি জায়গায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মাথা, হাত, পায়ের খণ্ডিত অংশ পাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমন বিভৎস মর্মান্তিক ঘটনা দেখে আতংক বিরাজ করছে সকলের মাঝে।

প্রায় দশ মাসে ৭টি করে খুনের ঘটনা ঘটেছে নাগেশ্বরী এবং উলিপুর উপজেলায়। এরমধ্যে নাগেশ্বরীতে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে নিজ বাড়িতেই খুনের স্বীকার হয় স্বামী-স্ত্রী। এছাড়াও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহত হয় কিশোর টাইলস মিস্ত্রি মামুন। হাত-পা এবং ঘাড় ভেঙ্গে ধান খেতে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা।
অপর দিকে জমিজমা সংক্রান্তের জের ধরে নিজের স্ত্রী-সন্তানের হাতে হাতুড়ির আঘাতে খুন হন রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বন্দবেড় গ্রামের প্রবাসী নুরু মিয়া।

রাজারহাটের নাককাটি এলাকার বাসিন্দা জলিল মিয়া, আব্দুল কুদ্দুস ব্যাপারিসহ অনেকেই বলেন, প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোথাও না কোথাও হতে আসছে লাশ উদ্ধারের খবর। রাত-বিরাতে বের হতেই ভয় লাগে।

স্থানীয় রেল আন্দোলন কমিটির নেতা ও সহকারী অধ্যাপক আব্দুল কাদের বলেন, একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটার প্রধান কারণ মাদক। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে প্রতিদিনই কোন না কোনভাবে মাদক এই জেলায় প্রবেশ করছে। আর অল্প বয়সে যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এর কারণে অপরাধ দিনে দিনে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আইনজীবী এবং কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যাড.আহসান হাবীব নীলু জেলায় খুনের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপারে বলেন, মাদক,সামাজিক অবক্ষয়,আইনের সঠিক প্রয়োগসহ মাইগ্রেট হয়ে আসা মানুষের সঙ্গে স্থানীয়দের সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে না ওঠায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধ কে কেন্দ্র করেও হচ্ছে খুনের ঘটনা।

তথ্যানুসারে জানাযায়, চলতি বছর জানুয়ারী থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৩৪ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে জানুয়ারিতে উলিপুরে-৩ জন,ভূরুঙ্গামারীতে-২ জন। ফেব্রুয়ারিতে-সদরে-১ জন, রাজারহাটে-১ জন। মার্চে- উলিপুরে-২ জন, রাজারহাটে-১ জন, নাগেশ্বরীতে-১ জন, রৌমারীতে-১জন এবং ফুলবাড়িতে-১জন। এপ্রিল-নাগেশ্বরীতে-১ জন,ভূরুঙ্গমারীতে-১ জন এবং উলিুপরে-১ জন। মে-নাগেশ্বরীতে-১ জন, রৌমারীতে-১ জন। জুন- ভূরুঙ্গামারী-১ জন এবং ফুলবাড়িতে-১জন। জুলাই-কচাকাটা-১ জন, রৌমারী-১ জন। আগস্ট নাগেশ্বরীতে-১ জন,রাজারহাট-১ জন। সেপ্টেম্বরে-নাগেশ্বরীতে-৩ জন, ভূরুঙ্গমারী-১ জন,রৌমারী-১ জন,সদর-১ জন। অক্টোবরের ২৫ তারিখ পর্যন্ত-উলিপুরে-১ জন, রৌমারীতে-১ জন,সদরে-১ জন এবং রাজারহাটে-১ জন খুন হয়েছে।

এই বিষয় পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, যেসব খুনের ঘটনা ঘটেছে সেগুলো তদন্তাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক আটক করা হয়েছে। বাকিদের কেউ আটক করার চেস্টা চালানো হচ্ছে।

Exit mobile version