Site icon Jamuna Television

অদম্য কিশোর নাটোরের রাসেল

নাজমুল হাসান, নাটোর থেকে
জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। নেই ডান পা। বাম পা রয়েছে, তা-ও আবার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা ছোট। পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে নিয়মিত জেডিসি পরীক্ষা দিচ্ছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়া মহল্লার কিশোর রাসেল।

পুরো নাম রাসেল মৃধা। পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে পুরো জেলার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি। সমাজে যেখানে প্রতিবন্ধিরা নিয়তিকে মেনে নিয়ে সবার দয়া দাক্ষিণ্যে বেঁচে থাকতে চায়, সেখানে রাসেল স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হতে চাইছে সকল বাধা অতিক্রম করে। রাসেলের এমন স্পৃহা দেখে তার পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

ইতিমধ্যে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার রাসেলের পরীক্ষা কেন্দ্র শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। নগদ অর্থ ও একটি হুইল চেয়ার প্রদানসহ রাসেলের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন এই কর্মকর্তা। সেই সাথে তার জন্য একটি বাড়ি করে দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রাসেল সিংড়া পৌর শহরের শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে। অভাব-অনটনের মাঝেও লেখাপড়ার প্রতি রাসেলের আলাদা স্পৃহা দেখে তার দরিদ্র বাবা-মা হাল ছাড়েননি। তার উচ্চ শিক্ষার সেই স্বপ্ন আজ পূরণ হতে চলেছে। সে বিগত দিনে পিএসসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়।

যমুনা নিউজকে রাসেল জানায়, সমাজের বোঝা হয়ে নয়, বরং লেখাপড়া শিখে মাথা উচু করে বাঁচতে চাই। প্রতিবন্ধিরা যে সমাজের বোঝা নয়। তা দেখিয়ে দিতে চাই। লেখাপড়া শিখে আমি মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক হতে চাই।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, রাসেলের মনোবল আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে। সে সমাজের অনন্য এক উদাহরণ। ইচ্ছাশক্তির জোর অনেক, রাসেল তারই বার্তা বহন করছে। তার উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যেতে সবরকম সহযোগিতা করা হবে। আর এই উপজেলায় একটি শিক্ষা কল্যাণ ট্রাষ্ট অচিরেই করা হবে। তাছাড়া প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করে রাসেলের জন্য একটি দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি করে দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ রাসেলের লেখাপড়ার জন্য ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছেন।

Exit mobile version