Site icon Jamuna Television

তূর্ণা নিশীথা’র এক যাত্রীর বর্ণনায় ট্রেন দুর্ঘটনা

হঠাৎ বিকট শব্দ আর ঝাঁকুনিতে ঘুম ভাঙে মোকাম্মেল হক খানের। চট্টগ্রাম থেকে তূর্ণা নিশিথা ট্রেনে করে ঢাকা আসছিলেন তিনি। আকষ্মিক শব্দে ঘুম ভাঙার পর লক্ষ্য করলেন ট্রেনটি থেমে গেছে। কী হয়েছে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। আশপাশের যাত্রীরাও তখন বেশিরভাগ ঘুমে ছিলেন। সবার জিজ্ঞাসু চোখ। কী ঘটেছে?

‘ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ৩টার কিছু বেশি হয়েছে সময়। কোথায় আছি কিছুই ঠাহর করতে পারছিলাম না। চারদিকে অন্ধকার। তবে আমাদের বগির লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল’, বলছিলেন মোকাম্মেল খান।

পরিস্থিতি বুঝতে এরপর যাত্রীরা একে একে নামতে থাকেন ট্রেন থেকে। অন্যান্য বগি থেকে কান্না-চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পান তারা। বড় কিছু ঘটেছে বুঝতে আর বাকি থাকে না।

মোজাম্মেল বলেন, ‘চিৎকার শুনে সামনে এগিয়ে যাই। গিয়ে যা দেখি তা বর্ণনা করার মতো নয়। অন্ধকারের মধ্যে দেখি ট্রেনের বগি উল্টে গেছে। মানুষজন পড়েন আছেন চারদিকে। আমি অন্তত ২০ জনকে দেখেছি পড়ে থাকতে। কী করবো বুঝতে পারছিলাম না।’

অল্পক্ষণের মধ্যে অন্যান্য বগির লোকজন জড়ো হতে থাকেন। সবাই আতঙ্কগ্রস্ত। রেললাইনের আশপাশের বাড়িঘর থেকেও মানুষজন জড়ো হতে থাকেন। ‘আধা ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয়রা এবং সুস্থ যাত্রীরা মিলে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। এরপর পুলিশ ও রেলের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন’, বলেন জনাব মোকাম্মেল।

‘কত লোক অসহায়ভাবে পড়ে ছিলেন। কারো হাত নেই। কারো পা নেই। কয়েকটি দেহ নিথর হয়েছে আছে দেখেছি। আহতদের আহাজারিতে আকাশ ভারি হয়ে উঠছিল’, বলেন মোকাম্মেল খান। তিনি জানান কর্তৃপক্ষের উদ্ধার অভিযান শুরুর পর তিনি বাসে করে নিরাপদে ঢাকায় ফিরেছেন।

সোমবার দিবাগত ভোর রাতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন তূর্ণা নিশীথা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক যাত্রী।

Exit mobile version