Site icon Jamuna Television

অনুপ্রবেশকারী ও নদী দখলবাজকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের প্রতিবাদ

জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশনা উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অগ্নিসংযোগকারীর পুত্র, অনুপ্রবেশকারী, ভূমিদস্যু ও নদী দখলবাজকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসাবে নৌকা প্রতীক প্রদানের প্রতিবাদ জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। আজ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।

নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বিতর্কিত আবদুল খালেক

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন,  স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে সম্প্রতি কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি হতে অনুপ্রবেশকারী, ভূমিদস্যু, নদী দখলবাজ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় অগ্নিসংযোগকারীর পুত্র আব্দুল খালেককে নৌকা প্রতীক প্রদান করা হয়েছে। জনশ্রুত যে, উক্ত আব্দুল খালেক ইতিপূর্বে শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এছাড়া, উপজেলা বিএনপির সদস্য হিসেবে আব্দুল খালেকের নাম লিপিবদ্ধ করা আছে। আব্দুল খালেককে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়ায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমিন হেলালীর পুত্র সালাউদ্দিন হেলালী কমল

তিনি আরও বলেন, শাপলাপুর ইউনিয়নে প্রার্থী হিসাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম নূরুল আমিন হেলালীর পুত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ও বিশিষ্ট টিভি সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন হেলালী কমল নৌকা প্রতীক প্রার্থনা করলে তৃণমূল হতে নাম প্রেরণ করা হলেও তাকেসহ তৃণমূল প্রস্তাবিত অন্য প্রার্থীদের উপেক্ষা করে কোন বিবেচনায় অনুপ্রবেশকারী এবং নদী দখলদার হিসাবে অভিযুক্ত বিতর্কিত ব্যক্তিকে নৌকা প্রতীক প্রদান করা হলো সেটা আমরা জানতে আগ্রহী!

মেহেদী হাসান বলেন, মাননীয় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কঠোর নির্দেশনা স্বত্ত্বেও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনুপ্রবেশকারীকে মনোনয়ন প্রদান জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের অবমাননা।

সংবাদ সম্মেলনে সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী সাঈফ ২০১৬ সালের ১৩৯৮৯ নং রিট পিটিশনে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত রায়ের ১৫ নম্বর নির্দেশনা পড়ে শোনান। এ রায়ের আলোকে এবং নির্দেশনায়, কোনো নদী দখলদার ও নদী দূষণকারী হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তি বাংলাদেশের সকল প্রকার নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এবং এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে উপর্যুপরি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মাননীয় আদালত নির্দেশ প্রদান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি তোলা হয়। দাবিতে বলা হয়-
(১) অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন সমূহের সর্ব পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে অনুপ্রবেশকারীদের নাম, পদবী, ঠিকানা সহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা সকল গণমাধ্যমে প্রকাশ সহ সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হোক।
(২) স্বাধীনতা বিরোধীদের সন্তান ও নাতি-নাতনি সহ বিএনপি,জায়ামাত-শিবির চক্রের সদস্য, দুর্নীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ী-সেবন কারী ব্যক্তিদের দলের সর্ব পর্যায়ে সম্মেলনে যাতে প্রার্থী, কাউন্সিলর ও ডেলিগেট হতে না পারে সে ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
(৩) অন্যান্য দল থেকে আগত নেতা-কর্মীদের ন্যুনতম ১০ বছর কোনো পদে পদায়ন করা হবে না মর্মে আওয়ামী লীগ এর গঠণতন্ত্রে সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হোক।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সালাহ উদ্দিন হেলালী কমল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র কমল শাপলাপুরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমিন হেলালীর বড় ছেলে। পাকিস্তান সরকারের করা রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে ১৩ নম্বর আসামি ছিলেন নুরুল আমিন হেলালী।  আগামী ১২ ডিসেম্বর এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

Exit mobile version