Site icon Jamuna Television

সৌদিতে নারীকর্মীদের ওপর নির্যাতন: উদ্ধার করা হয়েছে সেই হুসনাকে

সৌদি আরবের নাজরান এলাকায় একটি বাড়ি থেকে ভিডিও বার্তায় দেশে ফেরার আকুতি জানানো গৃহকর্মী হুসনে আরা কে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি এখন সৌদি আরবের নাজরান এলাকায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। যা জেদ্দা থেকে হাজার কিলোমিটার দুরে।

সোমবার এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নজরে আসে। এরপর সৌদিতে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের দাবি অনুযায়ী তাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেদ্দা দূতাবাস ।

এর আগে পঞ্চগড়ের সুমি আক্তারও সৌদি আরবের নাজরান এলাকায় নির্যাতনের শিকার হয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়ে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন। গত ১৫ নভেম্বর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

হুসনা আক্তার হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জ উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা।

ভিডিওবার্তায় হুসনা আক্তার বলেন, ‘আমি মোছা. হুসনা আক্তার। আমার দালালে ভালা কথা কইয়া-কামের কথা কইয়া আমারে পাঠাইছে সৌদি। নিজরাল (নাজরান) এলাকায় আমি কাজ করি। আমি আইসা দেখি ভালা না। আমার সাথে ভালা ব্যবহার করে না ওরা। ওরা আমার উপর অত্যাচার করে।

আমি বাক্কা দিন (১০/১২ দিন) হইছে আছি। এখন এরার অত্যাচার আমি সহ্য করতে পারি না দেইক্কা কইছি আমি যাইমু গা। এই কথা বলায় ওরা আরও বেশি অত্যাচার করে। আমি এজেন্সির অফিসে ফোন দিছি। অফিসের এরা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আর পারতাছি না। তোমরা যেভাবে পারো আমারে তোমরা বাঁচাও। এরা আমারে বাংলাদেশ পাঠাইতো চায় না। এরা আমারে ইতা করতাছে। অনেক অত্যাচার করতাছে। আমারে ভালা কামের (কাজের) কথা কইয়া পাঠাইছে দালালে। আমারে ইতা করতাছে ওরা। আমি আর পারতাছি না সহ্য করতাম। তোমরা যেভাবে পারো আমারে নেও।’

জানা গেছে, হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জ উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের হুসনা আক্তার আর্থিক সচ্ছলতার জন্য গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে ১৭ দিন আগে একটি এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরব যান। সেখানে গৃহকর্তার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রথমে স্বামী শফিউল্লাকে ভিডিও বার্তা পাঠান।

হুসনার স্বামী ওই এজেন্সিতে গিয়ে এসব কথা জানালে এজেন্সির সংশ্লিষ্টরা তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন এবং হুসনা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।

আর্থিকভাবে অসচ্ছল শফিউল্লা কোনো উপায় না পেয়ে স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য ওই ভিডিও তার এক ভাইয়ের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করান।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, নির্যাতনের শিকার নারীর নাম ঠিকানা ও সৌদিতে কোন জায়গায় আছেন সেটা আমাকে জানাতে হবে। তখন আমি মন্ত্রণালয়ে কথা বলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।

আর আগে সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হয়ে ফেসবুকে জীবন বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে ভিডিওবার্তা পাঠিয়েছিলেন পঞ্চগড়ের গৃহবধূ সুমি আক্তার।

তার ওই আকুতির ভিডিও ভাইরাল হলে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে চলতি মাসের ১৫ তারিখ সকালে তিনি বাংলাদেশে ফেরেন।

Exit mobile version