Site icon Jamuna Television

এভাবেই ম্যাচ পাতানো হয় ঘরোয়া ক্রিকেটে! (ভিডিও)

তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে এবার প্রমাণ মিলেছে ইচ্ছাকৃত ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার অভিযোগের। রেলিগেশনের মুখে থাকা ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাবের কাছে ২৮ রানে ম্যাচ হেরে দলটির অবনমন ঠেকিয়েছে কাঁঠালবাগান গ্রীন ক্রিসেন্ট ক্লাব। গেল বৃহস্পতিবার সিটি ক্লাব মাঠে হওয়া ম্যাচের স্কোর শিটেও ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার প্রমাণ মিলেছে। আগেই সুপার লিগ নিশ্চিত করা কাঁঠালবাগান সেই ম্যাচে একাদশ সাজায় নিয়মিত ক্রিকেটারদের বাদ রেখে। হাতে উইকেট থাকলেও জয়ের পেছনে ছোটেনি তারা।

২১ নভেম্বর সিটি ক্লাব ম্যাচে চলছিলো তৃতীয় বিভাগ লিগের সেই ম্যাচটি। যমুনা টিভির কাছে সকাল সকাল খবর এলো এই ম্যাচ হেরে যাবে কাঁঠালবাগান গ্রীন ক্রিসেন্ট ক্লাব। আর ২ পয়েন্ট পেয়ে রেলিগেশন লিগে খেলা ঠেকাবে প্রতিপক্ষ ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব।

ঘটনার সত্যতা খুঁজতে টিম যমুনা স্পোটর্স চোখ রাখে ম্যাচ আর স্কোর কার্ডে। যেখানে জয়ের জন্য কাঁঠালবাগানের লক্ষ্য ২৪৮ রান। একসময় স্কোরাবোর্ডে দলটির সংগ্রহ ৩১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান। তার মানে ১৮ ওভারে প্রয়োজন ৯১ রান, হাতে ৭ উইকেট। গ্রুপের শীর্ষ দলের তো এমন ম্যাচ তো হারার কথা না!

কিন্তু সূত্র বলছিলো ম্যাচ হারবে কাঁঠালবাগান। যমুনার ক্যামেরা তখন মাঠে। এরমধ্যে সুপার লিগ নিশ্চিত করা কাঁঠালবাগানের প্লেয়ার লিস্ট হাতে। চমকে যাওয়ার মতো একাদশ। নিয়মিত পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা নেই একাদশে। আগের ম্যাচটিতে ৫৫ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৮ রান আর বল হাতে ২ উইকেট নেয়া ডন মিয়া একাদশেই নেই। ইনজুরিও বলা যাবে না, কারণ তিনিই তো দ্বাদশ ক্রিকেটার!

আরো নেই, এক ম্যাচ আগেই ৫ উইকেট নেয়া আবু জাফর শরীফও। নেই দলের সবচে ইকোনমিক বোলার রাশেদ ইসলামও। এর মধ্যে হলো আরো ৪ ওভার। ৩৬ ওভার শেষে স্কোর সেই ৩ উইকেটেই ১৬১। মানে চার ওভারে মাত্র ৪ রান। সন্দেহ তখন ঘনীভূত- তবে কি ফিক্সিং-ই পরিণতি? সন্দেহকে ধ্রুব সত্য প্রমাণ করতেই যেন পরের তিন ওভার রান এলো মোটে ২! অর্থাৎ শেষ ৪২ বলে ৭ উইকেট হাতে থাকার পরও রান এসেছে মাত্র ৬!

এরপর কাঁঠালবাগানের উইকেট পতনের পর কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে এলো সাপ। ব্যাটিংয়ে নামলেন বোলার জাহিদুল হক। অথচ আগের ম্যাচে ৪১ রান করা টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন মিশু তখনও প্যাভিলিয়নে বসে। দেখা নেই আরেক ব্যাটসম্যান শিশির আহমেদেরও।

ম্যাচে একসময়ে প্রয়োজন ছিলো ১০৮ বলে ৯১ রান। হাতের মুঠোয় থাকা সেই ম্যাচ তখন ঢাকা ইউনাইটেডের কব্জায়। ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে ৫৪ বলে প্রয়োজন দাঁড়ালো ৭৬।

সূত্রের এমন খবর, একসময় মনে হয়েছিলো অসম্ভব, সেটাই হলো সত্য। ২৮ রানে ম্যাচ হারলো কাঁঠালবাগান!

কিন্তু কী লাভ এই হারে? উত্তর দেবে পয়েন্ট টেবিল। ১২ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগ আগেই নিশ্চিত করা কাঁঠালবাগানের এই ম্যাচ জেতা-হারায় কিছুই যায় আসে না। অন্যদিকে, ৬ পয়েন্ট পাওয়া ঢাকা ইউনাইটেড হারলেই খেলতে হতো রেলিগেশন লিগ। ম্যাচ জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে অবশেষে ঝুঁকিমুক্ত ঢাকা ইউনাইটেড ।

গণমাধ্যমের সামনে আবিষ্কৃত হলো ক্রিকেট ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার নতুন এক কৌশল। মাত্র ক’দিন আগেই পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের কবলে পড়েছিল কামরাঙ্গির চর ও ঢাকা রয়েল ক্রিকেটার্সের ম্যাচও! তৃতীয় বিভাগে এসব এখন হরহামেশাই হয়।

Exit mobile version