Site icon Jamuna Television

বৈশ্বিক উষ্ণতায় সাগরে কমছে অক্সিজেন, বড় মাছের হাঁসফাঁস অবস্থা

জলবায়ু পরিবর্তন এবং দূষণের কারণে সাগর-মহাসাগরে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে। ফলে ঝুঁকির মুখে মাছের অসংখ্য প্রজাতি। হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হয়েছে বড় প্রজাতির মাছের। শনিবার পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন’র প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বহু বছর ধরেই বিজ্ঞানীরা জানতেন, মহাসাগরগুলোতে পুষ্টিমান কমে যাচ্ছে। কিন্তু এখন তারা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে অক্সিজেন হ্রাস পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ফলে হুমকিতে পড়ছে টুনা, মার্লিন, হাঙ্গরের মতো বড় বড় মাছ। কারণ বড় আকৃতির মাছগুলোর বেশি শক্তির দরকার হয়। বিশ্বজুড়ে সাতশ’র বেশি সামুদ্রিক এলাকা এখন অক্সিজেন স্বল্পতায় ভুগছে। ১৯৬০ এর দশকে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৫টি। খবর বিবিসির।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষি খামার ও শিল্পকারখানা থেকে নাইট্রোজেন এবং ফসফরাস সমুদ্রের পানিতে গিয়ে মেশার কারণেই পুষ্টি-দূষণের ঘটনা ঘটছে। সেইসঙ্গে এসব কারণে সমুদ্রের পানিতে থাকা অক্সিজেনের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলছে বলে বিজ্ঞানীরা জানতেন। এতদিন ধারণা করা হতো, এটি শুধু উপকূলীয় এলাকার সমুদ্রেই প্রভাব ফেলছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ হুমকির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রিন হাউসের কারণে যেহেতু কার্বন-ডাইঅক্সাইড বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সমুদ্রগুলোকে আরও বেশি তাপ শুষে নিতে হচ্ছে। ফলে উষ্ণ পানি কম অক্সিজেন ধরে রাখতে পারছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ১৯৬০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে সমুদ্রের পানি থেকে ২ শতাংশ অক্সিজেন হারিয়ে গেছে। সারা বিশ্বের বিবেচনায় এটা খুব বেশি মনে না-ও হতে পারে। কিন্তু কোনো কোনো গ্রীষ্মপ্রধান এলাকায় এই হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি খুব সামান্য পরিবর্তনও সামুদ্রিক জীবনযাত্রার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন কম অক্সিজেনসমৃদ্ধ পানি জেলিফিশের মতো প্রাণীর জন্য উপকারি হতে পারে। কিন্তু টুনা মাছের মতো বড়, দ্রুত সাঁতার কাটতে পারে, এমন প্রাণীর জন্য সেটি ভালো নয়। আইইউসিএনের কর্মকর্তা মিন্না ইপস বলেন, ‘গত ৫০ বছরে অক্সিজেন কমে যাওয়ার হার যে শুধু চারগুণ হয়ে গেছে তাই নয়, এমনকি যেসব জায়গায় কার্বন নিঃসরণ কম হয়েছে সেখানেও মহাসাগর থেকে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে।’

Exit mobile version