Site icon Jamuna Television

বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে মাছ

আকাশ থেকে শিলাবৃষ্টি বা তুলার মতো বরফ ঝরে পড়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। উল্কা বৃষ্টিও মাঝে মধ্যে দেখেছেন অনেকে। কিন্তু মাছবৃষ্টি?

একটা দুটো নয়- আকাশ থেকে লাখ লাখ মাছ ঝরে পড়ে এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। রাস্তাঘাটে, বাড়ির সামনে, ছাদে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে হাজার হাজার মাছ। মাঝে মধ্যে নয়, প্রতি বছরই এমন ঘটনায় সাক্ষী হয়ে থাকেন মধ্য আমেরিকার হন্ডুরাসের লাখ লাখ মানুষ।

মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে এমন মাছবৃষ্টি প্রতি বছরই হয় হন্ডুরাসের বিভিন্ন জায়গায়। স্থানীয়রা এ ঘটনাকে বলেন ‘জুভিয়া দে পেতেস’। স্প্যানিশ এ শব্দটির অর্থ হল ‘মাছের বৃষ্টি’। আকাশ থেকে অঝোরে ঝরে পড়তে থাকে মাছ, স্কুইড, ব্যাঙ ও আরও কত কী! স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসময় রীতিমতো লোক নামিয়ে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করাতে হয়।

একটা সময় পর্যন্ত এ অঞ্চলের বহু মানুষ বিশ্বাস করতেন, এক সন্তের আশীর্বাদেই এমনটা হয়। ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে খ্রিস্ট ধর্মযাজক হোসে সুবিরানা হন্ডুরাসে আসেন। সে সময় এ অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ অত্যন্ত অনটন আর দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাতেন।

তাদের দুর্দশা দূর করতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন তিনি। তার প্রার্থনার পর থেকেই দারিদ্র্যের কষ্ট দূর করতে ঈশ্বর আকাশ থেকে মাছের বৃষ্টি ঝরান বলে বিশ্বাস করতে শুরু করেন এ অঞ্চলের মানুষ।

শোনা যায়, ১৯৭০ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ দলকে পাঠানো হয় হন্ডুরাসে। ওই দলের সদস্যরা এই মাছের বৃষ্টির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের ওই সদস্যরা জানান, এ অঞ্চলে আকাশ থেকে যেসব মাছের বৃষ্টি হয়, তা কোনো সমুদ্রিক মাছ নয়। সেগুলো মিষ্টি পানির মাছ।

অর্থাৎ, আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়া মাছগুলো কোনো নদী, পুকুর বা হ্রদের মতো মিষ্টি জলের জলাশয়ের মাছ। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ মাছই প্রায় একই প্রজাতির। যদিও ১৯৭০ সালে হন্ডুরাসে মাছের বৃষ্টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সদস্যদল পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল কর্তৃপক্ষ।

যে এলাকায় প্রতি বছর একবার বা দু’বার মাছের বৃষ্টি হয়, আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে। অনেকে মনে করেন, টর্নেডো বা সামুদ্রিক ঝড় আটলান্টিক মহাসাগরের বিভিন্ন অংশের মাছ উড়িয়ে এনে এ অঞ্চলে ফেলে। কিন্তু এমন ঘটনা প্রতি বছর কী করে সম্ভব তা নিয়ে এখনও যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।

Exit mobile version