Site icon Jamuna Television

আসামি আজিজ প্রবাসে নিরপরাধ আজিজ জেলে!

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
যশোরের চৌগাছায় এক আব্দুল আজিজের পরিবর্তে অন্য এক আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিরপরাধ আব্দুল আজিজ কারাগারে থাকলেও প্রকৃত আসামি আব্দুল আজিজ ধরা ছোঁয়ার বাইরে প্রবাস জীবনযাপন করছেন।

জানা যায়, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর রাতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে লোহিত মোহন সাহার ছেলে নবকুমার সাহার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৩ অক্টোবর নবকুমার সাহা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। বাঘারপাড়া থানায় যার নম্বর ছিল ১২। তারিখ ২৩/১০/০৯ ইং। মামলাটি আদালতে গেলে নম্বর হয় জিআর-১২৭/০৯। মামলা দায়েরের পর ২০১১ সালে ৩০ মার্চ তৎকালিন বাঘারপাড়া থানায় কর্মরত এসআই গাজী আব্দুল কাইয়ুম লুটতরাজ ও বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের ৩(ক) ধারায় ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে ৯ আসামির মধ্যে ৭ নং আসামি করা হয় চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজকে (জাতীয় আইডি কার্ডে আছে আজিজুর রহমান)। চার্জশিটে যার বয়স উল্লেখ করা হয় ৩০ বছর। মামলায় ৮ ও ৯ নং আসামি করা হয় চৌগাছা উপজেলার টেঙ্গুরপুর গ্রামের তসলিমের ছেলে হাশেম আলী ও নুর ইসলামের ছেলে শাহাজানকে।

চার্জশিট দাখিলের পর মামলাটি বদলী করে যশোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে মামলাটির নম্বর হয় এসটিসি ৬১/১২। আদালত পলাতক আসামি আব্দুল আজিজসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পুলিশ ২০১২ সালের ১ মার্চ আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। আদালত আব্দুল আজিজকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে আব্দুল আজিজ ২০১২ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্তি পান।

আসামি আব্দুল আজিজের আইনজীবী ছিলেন যশোর বারের সাবেক সম্পাদক শাহানুর আলম শাহিন। সেই থেকে আহাদ আলীর ছেলে আব্দুল আজিজ আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেন। তবে দেড় বছর আগে আসামি আব্দুুুল আজিজ প্রবাসে চলে যান। বর্তমানে কাতারে অবস্থান করছেন। যা সিংহঝুলি গ্রামের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রবাসে চলে যাওয়ায় আসামি আব্দুল আজিজ আদালতে গরহাজির থাকেন। ফলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৪ চলতি বছরের ৭ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে আবারও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

পরোয়ানার ভিত্তিতে গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার রাতে চৌগাছা থানার এএসআই আজাদের নেতৃৃৃৃত্বে পুলিশ প্রকৃত আসামি আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজকে বাদ দিয়ে মৃত আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। জজ আদালত শীতকালীন অবকাশে থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আব্দুল আজিজকে তোলা হলে আদালত তাকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে নিরপরাধ আব্দুল আজিজ কারাগারে দিন কাটাচ্ছেন।

আসামি আব্দুল আজিজের বর্তমান বয়স ৪০ বছর হলেও গ্রেফতার আব্দুল আজিজের বয়স ৬১ বছর। অপরদিকে আসামি আব্দুল আজিজের পিতা আহাদ আলী কারিগর জীবিত থাকলেও আটক আব্দুল আজিজের পিতা মৃত।

এব্যাপারে আব্দুল আজিজকে আটককারী এএসআই আজাদ বলেন, আসামির নাম ঠিকানা সঠিক থাকার পরই তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন আটক আব্দুল আজিজের পরিবার থেকেও জানানো হয়নি যে সে মামালার আসামি না। তাহলে এখন একথা আসছে কেন? আটক আব্দুল আজিজ যদি আটককৃত মামলার আসামি না হন তাহলে তাকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে। নাম ঠিকানা মিল থাকার কারণে আমাদের কিছুই করার নেই।

এদিকে আটক আব্দুল আজিজের ভাতিজা রাজু বলেন, রাতে না জানাতে পারলেও পরদিন সকালে আমরা জানাই যে আমার চাচা এ মামলার আসামি না। তবুও পুলিশ শোনেনি।#

Exit mobile version