Site icon Jamuna Television

উত্তরা ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস: তদন্ত করছে না নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান

উত্তরা ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনার কোনো তদন্ত করেনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক গবেষণা কেন্দ্র। তদন্ত ছাড়াই ‘প্রশ্নফাঁসের খবর ভিত্তিহীন’ বলে একটি বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। অথচ কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হয় আর তাতে কারা জড়িত- তা নিয়ে তথ্য-প্রমাণসহ খবর প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন।

তবে এ ঘটনা তদন্তের পরামর্শ দিয়েছে উত্তরা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তদন্ত হলে এবং তাতে ব্যাংকের কেউ এতে জড়িত থাকলে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

গত ২৪ নভেম্বর উত্তরা ব্যাংকের প্রবেশনারী অফিসার নিয়োগ পরীক্ষা হয়। রাজধানীর কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওই দিন বেলা তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত পরীক্ষা চলে। পরীক্ষা শুরুর প্রায় দুই ঘন্টা আগে যমুনা টিভির কাছে তথ্য আসে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে দেখা যায় পরীক্ষার মূল প্রশ্নপত্রের সাথে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন হুবহু মিলে গেছে। পরীক্ষার্থীদের অনেকেও কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে হুবহু প্রশ্ন মিলে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।

যমুনার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে উত্তরা ব্যাংক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ও ব্যাংকের সাবেক সিবিএ নেতা আহসানুল হাবীব ও তার সহযোগীরা মিলে প্রশ্নফাঁস করেছে। কিন্তু এতসব তথ্যপ্রমাণ থাকার পরও এ বিষয়ে তদন্তে নামেনি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো।

নিজেরা তদন্ত না করে অথবা আইনের আশ্রয় না নিয়ে উল্টো যমুনা টেলিভিশনের খবর ভূয়া প্রমাণ করতেই ব্যস্ত আছে প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে একটি প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপনও ছাপিয়েছে তারা। তাদের বক্তব্য, যেহেতু পরীক্ষা শুরুর এক মিনিট পর উত্তরপত্র প্রচার হয়েছে, তাই এটা প্রশ্নফাঁস নয়। যদিও বাস্তবে দেখা গেছে কয়েক ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। কারণ, পরীক্ষায় আসা প্রশ্নপত্রের সাথে হুবহু মিলে যাওয়া হাতে লেখা উত্তরপত্র যমুনা টেলিভিশনের কাছে আসে পরীক্ষা শুরুর দুই ঘন্টা আগে। হাতে লিখে একটি উত্তরপত্র তৈরি করা নিশ্চয়ই এক মিনিট সময়ে (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের দাবি অনুযায়ী) সম্ভবন নয়।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে উত্তরা ব্যংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবিউল হোসেন বলেন, আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। আমরা দ্রুত সমাধান চাই। ব্যাংকের কেউ জড়িত থাকলে দ্রুতই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপযুক্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এ নিয়ে কেনো তদন্ত করা হচ্ছে না বা তদন্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তাও নেয়া হচ্ছেনা কেন- সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি অর্থনৈতিক ব্যুরো’র প্রতিনিধিরা। তবে পরিচালক ড. শফিক-উজ-জামানের দাবি, এটা প্রশ্ন ফাঁস নয় বরং ‘উত্তরপত্র জালিয়াতি’ হতে পারে। কেউ জালিয়াতি করলে খাতা দেখেই তার প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে তিনি মনে করেন।

Exit mobile version