Site icon Jamuna Television

এনু-রুপন মুখ খুলছেন

সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলতে শুরু করেছেন পুরান ঢাকার আওয়ামী লীগের দুই নেতা এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়া। রিমান্ডে তারা জানিয়েছেন, কীভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া কাদের কাদের তারা ঘুষ দিতেন, অবৈধ অর্থের ভাগ দিতেন, এলাকায় প্রভাব বিস্তারের কলাকৌশল এসব নিয়েই তারা তথ্য দিয়েছেন।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে যাদের নাম আসছে সেগুলোও পর্যালোচনা করা হবে। সত্যতা পেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

এমন খবরে এনু ও রুপন ভূঁইয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক।

রিমান্ডের প্রথম দিন দফায় দফায় এনু ও রুপনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা জানান, তাদের ২২টি বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট ও অন্যসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বড় অংশ ক্যাসিনোর টাকায় কিনেছেন। এছাড়া বাকিটা পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজির টাকায় করেছেন।

তারা জানান, ২০১৮ সালে গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের পদ পাওয়ার পরপরই এলাকায় তাদের আধিপত্য বেড়ে যায়। তাদের কাছে ভিড়েন এলাকার অনেক প্রভাবশালী। তারা একটা বাহিনীও গড়ে তোলেন। সেখানে পুরান ঢাকার কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী লোকজনও এসে যুক্ত হয়। পুরান ঢাকার জমি দখল, ফুটপাত দখল থেকে এমন কোনো কর্মকাণ্ড নেই যা এনু-রুপন করেননি।

অবৈধ উপার্জন তারা অনুসারীদের পেছনেও খরচ করেছেন। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীকে বিলাসবহুল গাড়িও কিনে দিয়েছেন। পুরান ঢাকার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা এনু-রুপনের কাছে অর্থনৈতিকভাবে দায়বদ্ধ।

গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনু ও রুপনদের বাসায় এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা ও ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এরপর সূত্রাপুর ও গেণ্ডারিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) কেরাণীগঞ্জের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে দুই ভাইকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে থাকা নগদ ৪২ লাখ টাকা ও ১২টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

জানা গেছে, শ্যামল ছায়া কমপ্লেক্স নামে ১০ তলা ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটের কামরায় স্বেচ্ছাবন্দী ছিলেন দুই ভাই। রাতে ঘুমাতেন টয়লেটের ফলস্ রুফে। আড়াই মাসে তারা একবারের জন্যও বের হননি বাসা থেকে। তবু গ্রেফতার এড়াতে পারেননি। তাদের চুল-দাঁড়ি কাটার জন্য যে নাপিত বাসায় গিয়েছিল তাকে নিয়েই বাসা শনাক্ত করে সিআইডি। সেখানে গিয়ে তাদের ফলস্ রুফ থেকে বের করে আনা হয়। বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন তাদের বিশ্বস্ত পুরনো কর্মচারী শেখ সানি মোস্তফা। তাকেও গ্রেফতার করে সিআইডি।

Exit mobile version