Site icon Jamuna Television

পরকীয়ার সন্দেহে চাচাতো ভাইকে নিয়ে স্বামীকে হত্যা

স্টাফ রির্পোটার,নেত্রকোণা
আর্থিক অনটন, পারিবারিক কলহ ও পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার সন্দেহ করে নেত্রকোণার মদন গোবিন্দশ্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক উজ্জ্বল চৌধুরীকে (৪২) হত্যা করেছে স্ত্রী মণি বেগম। হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নেয় মণি বেগমের চাচাতো ভাই আনোয়ারুল ইসলাম (১৫)। শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে নেত্রকোণার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি আরও জানান, দশ বছরের সংসার জীবনে মণি বেগম ও উজ্জ্বল চৌধুরীর দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। তারপরও একে অপরকে সন্দেহ করা ও আর্থিক টানাপোড়েন নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াবিবাদ লেগেই থাকতো। এরই সূত্র ধরে একবছর আগে মণি সন্তানদের নিয়ে স্বামীর বাড়ি মদন গোবিন্দশ্রী গ্রাম ছেড়ে নিজ বাবার বাড়ি জেলা সদরের সিংহের বাংলা ইউনিয়নের রুই কোণাপাড়ায় চলে আসেন।

গত ১৮ জানুয়ারি মদন থেকে নেত্রকোণায় শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী সন্তানদের দেখতে আসেন উজ্জ্বল। বিদ্যালয় থেকে তিনি ছুটি নেয়ায় কিছুদিন ধরে সেখানেই অবস্থান করতে থাকেন।

মণির দাবি, ঋণ পরিশোধের জন্য শ্বশুরের কাছে তার স্বামী টাকা দাবি করছিলেন এবং টাকা না পাওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রোববার (২৬ জানুয়ারি) ঝগড়া হয়। এতে হত্যার পরিকল্পনা করে মণি বেগম দুপুরে উজ্জ্বলকে কোল্ড ড্রিংকসের (স্পিড) সাথে বেশ কয়েকটি ঘুমের ওষুধ সেবন করায়।

কোল্ড ড্রিংকস খাওয়ার পর উজ্জ্বল কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে শ্বশুর বাড়ি ত্যাগের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে। এ সময় স্ত্রী মণি বেগম উজ্জ্বলকে টাকা দেয়ার কথা জানিয়ে পথিমধ্যে (জঙ্গল) দাঁড়াতে বলে।

পূর্ব পরিকল্পনা মতে জঙ্গলের মধ্যে অপেক্ষা করছিলো মণির চাচাতো ভাই আনোয়ারুল। সেখানেই দুজন মিলে উজ্জ্বলকে ধরে গলায় মাফলার প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে জঙ্গলের ভিতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ।

হত্যার রহস্য উদঘাটনে মরদেহটি উদ্ধারের পর শ্বশুর-শাশুড়ি এবং স্ত্রীসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে তাদেরকে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ। অপরদিকে নিহতের ভাই মরদেহ উদ্ধারের দিন সন্ধ্যায় মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন।

হত্যাকারী স্ত্রী মণি জেলা সদরের কোণাপাড়া এলাকার আব্দুল হাইয়ের মেয়ে। উজ্জ্বল জেলার মদন উপজেবিন্দশ্রী ইউনিয়নের বড়বাড়ির কেনু মিয়া চৌধুরীর (মৃত) ছেলে। তিনি গোবিন্দশ্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক ছিলেন।

Exit mobile version