Site icon Jamuna Television

লড়াকু পারভেজ ইমনের গল্প

মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন, সেখান থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন। যেতে হয়েছে মাঠের বাইরে, ফিরেছেন বুকচিতিয়ে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে লড়েছেন, করেছেন গুরুত্বপূর্ণ রান। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে একজন পারভেজ ইমন হয়ে উঠেছিলেন লাল-সবুজের অদম্য কাণ্ডারি। মনে করিয়ে দিয়েছেন এশিয়া কাপে এক হাতে খেলা সাহসী তামিম ইকবালকে। সেই লড়াকু তামিমকে মনে রেখেছে বাংলাদেশ, মনে রাখবে পারভেজ ইমনকেও।

মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমের পথটা যেনো শেষ হতে চায় না। হাজার বছরের পথ পাড়ি দিয়ে পৌছাতে হবে পারভেজ ইমনকে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে যখন ড্রেসিংরুমের সিঁড়ি ভাঙ্গছিলেন, ব্যথার কষ্ট একাকার হয়েছিলো ইমনের চেহারায়। শেষ পর্যন্ত যেটি ঝরেছে বৃষ্টি হয়ে। পায়ের পেশির টান নিয়ে রুম পর্যন্ত পৌছাতে পারেননি, বসে পড়তে হয়েছিলো সিঁড়িতেই।

অথচ এই পা নিয়েই খেলেছেন ৩৭টি বল। তার ব্যাট থেকে আসা এক একটি রান গল্প লিখেছে অদম্য বাংলাদেশের। প্রতিটি সিঙ্গেলস রানে ইমনের ককিয়ে উঠা মুখটা বিধেছে লাখো সমর্থকের মুখে।

২০১৮ এশিয়া কাপে ভাঙ্গা হাত নিয়ে মাঠে ফিরেছিলেন তামিম। এক হাতেই মোকাবিলা করেছিলেন শ্রীলঙ্কার। উদাহরণ রেখে গিয়েছিলেন সাহসিকতার। সেই সাহসিকতা আরো একবার ঘুরে ফিরে এলো অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের মঞ্চে। পায়ের পেশির ব্যাথা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ব্যাট করা পারভেজ ইমনের হাত ধরে।

১২-তম ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদুল হাসান জয় যখন ফিরলেন, তার সাথে ড্রেসিংরুমের পথ ধরতে হলো ইমনকেও। ৬২ রানে ২ উইকেটের দল তখন বাংলাদেশ। আর ৪২ বলে ২৫ রান পারভেজ ইমনের।

২৩-তম ওভারের শেষ বলে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন ফিরে যাচ্ছেন অভিষেক দাস, তখনো জয় থেকে ৭৬ রান দূরে বাংলাদেশ। আবারও মাঠে ফিরলেন ইমন। ৪১ রানের জুটি গড়লেন অধিনায়ক আকবর আলীর সাথে।

৪১ রানের সেই জুটিতে পারভেজ ইমনের রান ২২। জুটিতে বাউন্ডারি ৪টি, পারভেজের ৩টি। জুটিতে ১৫ বার দৌড়ে প্রান্ত বদল করতে হয়েছে এই ওপেনারকে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে দৌড়ানো পারভেজের প্রতিটি রানই তো বীরত্বের গল্প। বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের গল্প। অধরা এক বিশ্বকাপ জয়ের গল্প।

Exit mobile version