Site icon Jamuna Television

নেলসন ম্যান্ডেলার কারামুক্তির ৩০তম বর্ষপূর্তি আজ

বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার কারামুক্তির ৩০তম বর্ষপূর্তি আজ। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে তার অবদান অবিস্মরণীয় আজও। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ম্যান্ডেলা ত্যাগ ও আদর্শের যে অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে কোটি মানুষকে।

রোবেন আইল্যান্ড। কেবল নেলসন ম্যান্ডেলার বন্দীশালা হওয়ার কারণেই সারা বিশ্ব চেনে এ দ্বীপকে। দীর্ঘ ২৭ বছরের বন্দীজীবনের ১৮ বছরই এ নির্জন দ্বীপের কারাপ্রকোষ্ঠে কেটেছে ম্যান্ডেলার। তার কারামুক্তির বর্ষপূর্তিতে তাই বিশেষ আয়োজন এখানে।

জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান আর প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার চেয়েছিলেন ম্যান্ডেলা। আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের হয়ে কৈশোর-তারুণ্য কেটেছে সংগ্রামে। ১৯৬২ সালে যখন যাবজ্জীবন জেলের সাজা হয়, তখন ম্যান্ডেলা ৪৪ বছরের যুবক। দীর্ঘ ২৭ বছর পর মুক্তি ১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি যখন মুক্তি পান, তখন ৭০ পেরোনো বৃদ্ধ তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ক বলেন, “৩০ বছর আগে সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ সরকারই কিন্তু শ্বেতাঙ্গ শাসনের অবসানের পথ উন্মুক্ত করেছিল। সেসময়ের সরকারপ্রধান হিসেবে পার্লামেন্ট অধিবেশনে স্বাধীনতাকামীদের আন্দোলনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলাম আমি। যার ফলে ম্যান্ডেলার কারামুক্তি পথ খুলে যায়।”

অনমনীয় অবস্থান, আর প্রায় তিন দশকের কারাবাস বৃথা যায়নি ম্যান্ডেলার। তার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সমান অধিকার আদায়ের আন্দোলনে বিশ্বব্যাপী প্রতীক হয়ে ওঠেন তিনি।

কারামুক্তির পর, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ম্যান্ডেলা। চাইলে আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকতে পারতেন, কিন্তু, এক মেয়াদ দায়িত্ব পালনের পরই অবসর নেন রাজনীতি থেকে। মৃত্যুর ৭ বছর পেরোলেও ম্যান্ডেলার প্রতি ভালোবাসা-শ্রদ্ধা এতটুকু কমেনি মানুষের। তবে, বৈষম্যহীন আফ্রিকা গড়ার যে স্বপ্নে বিভোর ছিলেন, তার বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন আছে এখনো।

নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন’র কর্মকর্তা ভার্ন হ্যারিস বলেন, “ম্যান্ডেলার আন্দোলনের সময়কাল ৩০ বছর পেছনে ফেলে এসেছি আমরা। কিন্তু আজও সেই প্রেক্ষাপট বর্তমান। এখনও এদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়মিত ঘটনা। এর মানে হলো ম্যান্ডেলার কারামুক্তির দিনটি আসলে আমাদের আন্দোলনের শেষ নয়, বরং সূচনা ছিল।”

সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে, ম্যান্ডেলার আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নেয়ার পরামর্শ দেন, তার ভক্তরা।

Exit mobile version