Site icon Jamuna Television

দৌলতদিয়ায় আবারও যৌনকর্মীর জানাজা ও দাফন

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
২য় বারের মত আবারও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার যৌনপল্লীর এক যৌনকর্মীর জানাজা নামাজ ও দাফন করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের যৌনপল্লী সংলগ্ন গোরস্থানের মাঠে যৌনকর্মী রিনা বেগমের জানাজার নামাজ হয়। পরে তাকে দাফন করা হয়। জানাজা নামাজ পড়িয়েছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানা জামে মসজিদের ইমাম মোঃ আবু বক্কার সিদ্দিকি।

জানাজার নামাজে অংশ নেন, রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসক ও অপরাধ) মোঃ সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ হেডকোয়াটার্স) মোঃ ফজলুল করিম, গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহমান সহ স্থানীয় অনেকে।

রাজবাড়ী পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান স্যারের নির্দেশনায় দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর মানুষের মানবিক দিকগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক রাজবাড়ী জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ধর্মীয় বিষয়টি কারো উপর চাপানো ঠিক নয় তাই গোয়ালন্দ ঘাট থানা মসজিদের ইমামকে দিয়ে এইবারের জানাজার নামাজ পড়ানো হয়েছে। আগামীতে ধর্মীয় রীতি মেনে এই জানাজা ও দাফনের কাজ অব্যহত থাকবে।

দৌলতদিয়া পূর্বপাড়া যৌনপল্লীর ‘অসহায় নারী ঐক্য সংগঠন’ এর সভানেত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, ‘আমরা যারা দৌলতদিয়া যৌনপল্লির বাসিন্দা, আমরাও তো সমাজের অন্য মানুষের মতোই মানুষ। আমাদেরও আছে অধিকার। আগে এখানে কেউ মারা গেলে তাকে নদীতে ভাসানো বা মাটিচাপা দেওয়া হতো। আমরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম আমাদের এই পল্লির বেশিরভাগ নারীই মুসলিম। আমরা মারা গেলে যেন আমাদের জানাজা আর দাফন হয়। সেই দাবি মেনে এখন আমাদের জানাজার ব্যবস্থা হয়েছে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান, পিপিএম জানান,যৌনকর্মীরাও মানুষ। তাদেরও অধিকার রয়েছে স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার।

উল্লেখ্য, এরআগে গত ২রা ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান,পিপিএম এর উদ্যোগে ধর্মের রীতি মেনে দীর্ঘ কালের নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া বা মাটি চাপা দেওয়ার প্রথা ভেঙ্গে প্রথমবারের মতো যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়।

তবে ইসলাম ধর্মের রীতি মেনে যৌনকর্মী হামিদা বেগমের জানাযার নামাজ পড়ানো নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হবার পর ইমাম গোলাম মোস্তফা এবার রিনা বেগমের জানাজার নামাজ পড়ান নি।

Exit mobile version