Site icon Jamuna Television

নাগরিক জীবনে ‘লো ব্যাটারি’ আতঙ্ক

স্মার্টফোনের বহুবিধ ব্যবহার জীবনটাকে করে দিচ্ছে আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। কিন্তু স্বাচ্ছন্দ্যময়তার কাবাবে হাড্ডি হিসেবে হাজির হয়েছে ফোনের ব্যাটারির ক্ষয়িষ্ণু আয়ুষ্কাল।

যুক্তরাজ্যে ওটু নামক একটি প্রতিষ্ঠানের করা জরিপে দেখা গেছে, দেশটির প্রতি চার ফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে একজন সবসময় ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়ার আতঙ্কে থাকেন। দেশটিতে প্রায় ৯৫ ভাগ পূর্ণ বয়স্ক মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন। জরিপে আরও দেখা যায়, ৪০ শতাংশের বেশি ফোন ব্যবহারকারী একটি চার্জার আর পাওয়ার ব্যাংক সব সময় সাথে রাখেন। প্রথম দিকে বাজারে আসা রেগুলার ফোনগুলোতে ব্যাটারির চার্জ থাকা না থাকা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না। যা চার্জ থাকত তা দিয়ে দিব্যি দুই তিন কথা চালিয়ে নেওয়া যেত। এ চিত্র পাল্টে যেতে থাকে অ্যান্ড্রয়েড নির্ভর স্মার্টফোনগুলো বাজারের আসার সাথে সাথে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা দেওয়া ফোনগুলোতে চার্জেরও প্রয়োজন হয় বেশি। কেনই বা হবে না, আগে শুধু কথা বলতে পারলেই হত; এখন ফেসবুকিং থেকে শুরু করে প্রিয় জনের লাইভ ছবি দেখতে দেখতে কথা না বললে কি আর চলে! শুধু কি তাই, পেশাগত কাজে সব সময় যুক্ত থাকতে হয়ে অনলাইনে, কিংবা করতে হয় লাইভ কনফারেন্স। পাশাপাশি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের উচ্চগতি আমাদের জীবধারাকে আমুল পাল্টে দিয়েছে। এমন অনেকেই আছেন প্রতিদিনের প্রতিটি মুহুর্ত তারা ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রামসহ আরও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। অনেকে আছেন ইউটিউবসহ আরও অন্যান্য বিনোদন সাইটগুলো থেকে ভিডিও স্ট্রিমিং করে দেখেন।

খোদ ঢাকা শহরের যানজটে বসে থাকা যাত্রীদেরও দেখা যায় ইউটিউবে বসে নাটক কিংবা সিনেমা দেখছেন। এতে দিনের আধাবেলা না যেতে মুমূর্ষু সংকেত দেয় হাতে অতি প্রয়োজনীর মোবাইল ফোনের ব্যাটারি। সংকট এড়াতে অনেকেই বাধ্য হয়ে আলাদা ব্যাটারি চার্জার ব্যবহার করেন। কিন্তু কর্মব্যস্ত এ জীবনে মনের ভুলে ফোন ও ফোনের জন্য অতিরিক্ত এই চার্জারটিকে অনেক সময়েই চার্জ দেওয়া হয় না। তাতে কার কি এসে যায়, প্রয়োজন তো আর মনের ভুল আমলে নেবে না।

গবেষকরা বলছেন, প্রযুক্তি উন্নতির সাথে সাথে শীঘ্রই এ সমস্যা কেটে যাবে। তখন একবার চার্জ দিয়ে এক সপ্তাহ পার করে দেওয়া যাবে। ভবিষ্যতবিদ ড. ইয়ান পিয়ারসন বলেন, ‘পরিধানযোগ্য প্রযুক্তি’র সক্ষমতা ও ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে, এবং চার্জের প্রয়োজনও কমে যাবে। তিনি মনে করেন ভবিষ্যতে পোশাকে লেপটে থাকা সৌর কোষ, অথবা শরীরে তাপ বা অঙ্গ সঞ্চালন থেকে ফোন চার্জ দেওয়া সম্ভব হবে। তাই যদি হয়, তবে ফোনে আর চার্জ না দিলেও চলবে। কিংবা এমনও হতে ফোন চার্জ দেওয়াটা নেহায়েৎ সেকেলে বিষয় পরিণত হবে। তবে, তার আগ পর্যন্ত ফোনের ‘লো ব্যাটারি’ নিয়ে দুঃশ্চিতাকারীর সংখ্যা আপাতত বাড়তে থাকবে বলে মনে হচ্ছে।

যমুনা অনলাইন: এফএইচ

Exit mobile version