Site icon Jamuna Television

স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার

সরকারি বিভিন্ন দফতরে ধরনা দিয়েছেন দিনের পর দিন। যোগাযোগ করেছেন মন্ত্রীর সাথেও। কিন্তু কেউ কানেই তুলেনি তাদের আবেদন। সবাই ফিরিয়ে দিয়েছেন ‘বরাদ্দ নেই’ বলে।

শেষমেশ আর সরকারি বরাদ্দের জন্য বসে থাকেননি টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নবাসী। বসে থাকলে যে চলবে না তাদের। বন্যার সময় তিস্তার পানি তো বরাদ্দ বুঝবে না! ফলে নিজেরাই নেমে গেছেন ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণের কাজে। গত প্রায় ছয় মাস ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ শেষ করেছেন বাঁধটির।

নিজেদের সাহসী কাজের সুফল পেয়েছেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার এই ইউনিয়নের মানুষ। নির্মাণ শেষ হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বন্যা দেখা দেয় উত্তরাঞ্চলে। গত ক’দিনের ভয়াবহ বন্যায় তিস্তাপাড়ের বহু এলাকা তলিয়ে গেলেও পানি ঢুকেনি টেপাখড়িবাড়িতে। তবে কিছু জায়গায় বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলোও আবার নিজেরাই সংস্কার করছেন এখন!

বাঁধ নির্মাণে কেউ দিয়েছেন স্বেচ্ছাশ্রম। আবার কেউ নগদ টাকা আর বাঁশ দিয়ে সহায়তা করেছেন। কেউ কেউ শ্রমও দিয়েছেন, আবার কাজও করেছেন। বর্তমানে চলা সংস্কার কাজও চলছে এভাবে ভাগাভাগির মাধ্যমে।

স্বেচ্ছাশ্রম অভিযানের নেতা ময়নুল হক বলেন, আমরা বহু দৌড়াদৌড়ি করে কারো সাড়া পাইনি। তাই নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজনে কাজে নামি। এখন যদি বাঁধটিকে আরো ভালভাবে নির্মাণের উদ্যোগ সরকার নেয়, তাহলে আগামীতে বড় ধরনের কোন বন্যায় এই এলাকার ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচবেন।

কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা এখনো বলছেন বরাদ্দহীনতার কথা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিভিশন কাজ করা নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেট বরাদ্দের পর নতুন ডিজাইন করে কাজ শেষ করতে অন্তত তিন বছর সময় লাগবে।

তবে তিনি এলাকাবাসী উদ্যোগকে ইতিবাচক বলে মনে করেন।

স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণের বিষয়টির প্রশংসা করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ খালেদ রহীম বলেন, জনগনের সম্পৃক্তায় বাঁধটি নির্মাণ অবশ্যই ইতিবাচক।

টেপাখড়িবাড়ীর ২০ হাজার মানুষের চাওয়া, নিজেদের অপেশাদার হাতে বানানো বাঁধটিকে আরও মজবুত করতে যেন সরকারি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়।

/কিউএস

Exit mobile version