Site icon Jamuna Television

করোনা প্রতিরোধ: ইসলামের দৃষ্টিতে করণীয়

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন সারাবিশ্বের কাছেই আতঙ্কের। যে ভাইরাসের সাথে কিছুদিন আগেও মানুষ পরিচিত ছিলো না তা’ই আজ যত আলোচনা সমালোচার কেন্দ্রবিন্দুতে। চলুন জেনে নেয়া যাক ইসলাম কি বলে এটা নিয়ে?

ইসলামের ব্যখ্যায় বলা হয়েছে, যখন মানুষ আল্লাহ তাআলার অবাধ্য হয় তখন আল্লাহ পাক পৃথিবীতে গজব নাজিল করেন যাতে মানুষ তাদের ভুল বুঝতে পেরে তাওবার মাধ্যমে আবার ফিরে আসতে পারে। তবে মহামারি থেকে বাঁচার উপায়ও ইসলাম বলে দিয়েছে স্পস্টভাবেই।

এ সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। আর সেটা হলো ক্ষমা চাওয়া। যে কোন মহামারি থেকে বাঁচতে প্রথম ও প্রধান করণীয় হচ্ছে- নিজেদের কৃতকর্মের জন্য মহান আল্লাহর কাছে তাওবা করা তথা ক্ষমাপ্রার্থনা করা।

তাই এমন সংকটময় দিনে আমাদের সবার উচিত মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। সেইসাথে সকল অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকা। সর্বদা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকা। কারণ ইসলামে স্পষ্টভাবে বলা আছে কিয়ামতের নিদর্শনগুলোর একটি হলো মহামারি।

এ বিষয়ে রাসুল (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের আগের ছয়টি নিদর্শন পরিষ্কার হবে। সেগুলো হলো- আমার (নবী কারিম) মৃত্যু, অতঃপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়, অতঃপর তোমাদের মধ্যে ঘটবে মহামারি, বকরির পালের মহামারির মতো, সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যক্তিকে একশ’ দিনার দেয়ার পরও সে অসন্তুষ্ট থাকবে।

রাসুল (সা.) আরও বলেন, অতঃপর এমন এক ফিতনা আসবে যা আরবের প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করবে। অতঃপর যুদ্ধবিরতির চুক্তি- যা তোমাদের ও বনি আসফার বা রোমকদের মধ্যে সম্পাদিত হবে। অতঃপর তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং ৮০টি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে। প্রতিটি পতাকার নিচে থাকবে ১২ হাজার সৈন্য। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১৭৬)

বলাবাহুল্য, রাসুল (সা.) এর ভাষ্য আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে অনেকাংশেই মিলে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায় বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে প্রাচুর্য বেড়েই চলছে। আর সেই সুযোগে নতুন নতুন রোগও আত্মপ্রকাশ করছে। এগুলো বন্ধ করার সাধ্য নেই কারও।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মহামারি আল্লাহর গজব বা শাস্তি। তিনি বলেন, বনি ইসরাঈলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল তার বাকি অংশই হচ্ছে মহামারি। অতএব, কোথাও মহামারি দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেয়ো না। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস : ১০৬৫)

তাই যেখানে এ ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা দেবে, সেখানে যাতায়াত থেকে বিরত থাকা উত্তম। দেখা যায়, এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ সরকারিভাবে করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে যাতায়াতে সতর্কতা জারি করেছে। যেহেতু চিকিৎসকদের মতে এ ভাইরাসটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়।

তবে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে পাপী-জাহান্নামি মনে করা যাবে না বলেও উল্লেখ রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মহামারিতে মারা যায় সে শহীদ। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, পাঁচ প্রকার মৃত শহীদ—মহামারিতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত এবং যে আল্লাহর পথে শহীদ হলো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৮২৯)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Exit mobile version