Site icon Jamuna Television

করোনায় বিশ্বব্যাপী ৮১ শতাংশ কর্মজীবী ক্ষতিগ্রস্ত

করোনার বিপর্যয়ে বর্তমানে বিশ্বের ৩৩০ কোটি কর্মজীবী মানুষের মধ্যে ৮১ শতাংশই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিশ্বব্যাপী লকডাউনের কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কারখানা পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এ হিসাবে বিশ্বের পাঁচজন কর্মজীবীর চারজনই কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘করোনার বিপর্যয়ে কর্মসংস্থান ও কর্মঘণ্টায় প্রভাব’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। এটি মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়।

নতুন এ সমীক্ষা অনুযায়ী, ১২৫ কোটি শ্রমিক সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। তারা এমন সব খাতে কাজ করেন যেগুলো করোনার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব খাতের বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে কিংবা মজুরি কমিয়ে দিতে পারে।

আইএলও বলছে, আমেরিকা অঞ্চলের ৪৩ শতাংশ এবং আফ্রিকা অঞ্চলের ২৬ শতাংশ শ্রমিক কাজ হারানো বা মজুরি কমে যাওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ খাতগুলোতে কাজ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) বিশ্বব্যাপী মোট কর্মঘণ্টার ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যাবে। অর্থাৎ সাড়ে ১৯ কোটি পূর্ণকালীন শ্রমিকের কর্মঘণ্টার সমান কর্মঘণ্টা কমে যাবে।

এর মধ্যে আরব বিশ্বে ৫০ লাখ পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজের সমান কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে। এ ছাড়া ইউরোপে এক কোটি ২০ লাখ এবং এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১২৫ কোটি পূর্ণকালীন শ্রমিকের কাজের সমান কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে।

উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেই কর্মঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে।

আইএলও’র মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, উন্নত ও উন্নয়নশীল- সব দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও শ্রমিকেরা করোনার কারণে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।

দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করতে পারলেই টিকে থাকা ও বিপর্যয়ের মধ্যে পার্থক্য গড়ে তোলা যাবে। সংস্থাটি জানিয়েছে, আবাসন (হোটেল-মোটেল), খাবার ব্যবসা, উৎপাদন, খুচরা ব্যবসা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে বা নেবে- এর ওপরেই শ্রমবাজারে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নির্ভর করছে।

আইএলও বলছে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট প্রবল হতে পারে। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার যদি সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নেয়, তবে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ তাদের চাকরি হারাবেন।

সংস্থাটি বৈশ্বিক এ দুর্দশা থেকে রক্ষায় জরুরি, বৃহৎ ও সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ দিয়েছে। এর পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনা এবং আয় ও চাকরির ক্ষেত্রে সহযোগিতা দেয়ার কথাও বলেছে।

এসব উদ্যোগের মধ্যে আছে সামাজিক সুরক্ষা, স্বল্পমেয়াদি কাজের পরিধির প্রসার, ছোট ও মাঝারি আকারের শিল্পের শুল্ক হ্রাস।

Exit mobile version