Site icon Jamuna Television

করোনায় বিশ্বনেতাদের ৮টি বিতর্কিত মন্তব্য

করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৭ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। সর্বোচ্চ সংখ্যাক রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে এরপরেই ফ্রান্সের অবস্থান।

এমন সংকটের সময়ে কিছু সংখ্যক দেশের নেতারা ভাইরাসটি নিয়ে এমন ধরনের মন্তব্য করেছেন যাতে এই মহামারির ভয়াবহতাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এমনই এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে এরকম কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্য তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো-

‘আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে’
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম যেদিন করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর রিপোর্ট করা হলো তার দু’দিন পর ২২শে জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিএনবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। তাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-নাইনটিনের সংক্রমণকে খুব একটা গুরুত্ব দেন নি। কিন্তু এর দু’মাস পর সেখানকার পরিস্থিতি সবাই দেখেছে।

‘এটা সামান্য ফ্লুর মতো’
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বোলসোনারোর জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে করোনা আসার পর থেকেই। সম্প্রতি তিনি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন তা ব্রাজিলের অনেক মানুষকে ক্ষুব্ধ করেছে। বোলসোনারো যে শুধু এই মহামারিকে খাটো করে দেখিয়েছেন তা নয়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কিছু নির্দেশনাও তিনি বার বার ভঙ্গ করেছেন। বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নরদের ঘোষিত লকডাউনেরও তিনি বিরোধিতা করছেন।

‘করমর্দন নিয়ে চিন্তিত নই’
যুক্তরাজ্যে কোভিড-নাইনটিনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ৩রা মার্চ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি লোকজনের সঙ্গে করমর্দন করার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন নন। এই মন্তব্যের ফলে তাকে প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি এখন আইসিইউতে।

‘আপনি তো এগুলোকে চারপাশে উড়তে দেখেন নি। দেখেছেন কি?’
করোনাভাইরাস মহামারির ব্যাপারে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো যে মনোভাব দেখিয়েছেন তাতে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তার দেশেও করোনার বিস্তার ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলে তিনি হাস্যচ্ছলে তা উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি তো এই ভাইরাসকে “চারপাশে উড়তে” দেখেন নি। এছাড়া করোনাভাইরাসের ভীতিকে তিনি “মানসিক বৈকল্য” বলেও উল্লেখ করেছেন।

‘আমি আপনাকে কবর দিয়ে দেব’
ফিলিপিনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে করোনাভাইরাসের হুমকিকে খাটো করা তো দূরের কথা, তিনি বরং একে অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন। দেশটিতে কঠোর সব বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে লকডাউন ও কারফিউ জারি করা। তবে খাদ্য ঘাটতির প্রতিবাদে একবার রাস্তায় বিক্ষোভ হয়েছে।

‘পরিবারকে নিয়ে বাইরে খাওয়া চালিয়ে যান’
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস মানুয়েল লোপেজ ওব্রাদোর কোভিড নাইনটিন মোকাবেলায় তার দেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দেওয়া উপদেশের বিরোধিতা করে আসছেন। সারা দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। তাকে জনসমাগমে যোগ দিতে দেখা গেছে, দেখা গেছে শিশুদের চুম্বন করতে এবং সমর্থকদের ভিড়ে মিশে গিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানাতে।

‘সমকামী বিবাহ আইন দায়ী’
ইরাকে প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুক্তাদা আল-সদর যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী দেশগুলোতে করোনায় সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেছেন। ভাইরাসটির বিস্তার প্রতিরোধে ইরাকে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেগুলো ভঙ্গ করে আল-সদর নামাজের আয়োজন করছেন। এছাড়াও কোভিড-নাইনটিন ছড়িয়ে পড়ার জন্য তিনি “সমকামী বিবাহ আইনকে” দায়ী করেছেন।

‘জনগণকে আমরা কিছু তথ্য দেইনি’
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো স্বীকার করেছেন উদ্দেশ্যমূলকভাবেই তিনি কোভিড-নাইনটিন সংক্রান্ত কিছু তথ্য গোপন করেছিলেন। ঠিক কতোজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সেটি জানানো হয়নি। লোকজন যাতে পাগলের মতো কেনাকাটা করতে শুরু না করে দেয় সেজন্যেই এই তথ্য গোপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Exit mobile version