Site icon Jamuna Television

ভোলায় ১৫ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার, আটক ইউপি মেম্বার

ভোলা প্রতিনিধি:

ভোলার লালমোহনের বদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশ থেকে ১৫ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে ওই ইউনিয়নের ওমর মেম্বারের ওয়ার্ডে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখা এসব চাল উদ্ধার করে ট্যাগ অফিসার ও স্থানীয় থানা পুলিশ। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ ওমরকে আটক করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার থেকে বদরপুর ইউনিয়নে জেলেদের মাঝে বিতরণ করা হলেও অধিকাংশ জেলেই পায়নি পুনর্বাসনের এ চাল। অথচ খাদ্য গুদাম থেকে দুই মাসের চাল ছাড় দেয়া হলেও চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদুল হক তালুকদার চাল বিতরণ করেছেন ১ মাসের।

ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত ১৭১০ জন জেলের মধ্যে চাল বিতরণ করার কথা থাকলেও প্রকৃত জেলেদের মধ্যে অধিকাংশরাই চাল পায়নি। চেয়ারম্যান ও তার ভাতিজার পছন্দের
লোকদের চাল দিয়ে বাকিসব চাল আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চেয়ারম্যান ও তার ভাতিজাসহ ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার ওমর প্রতিবারই চাল বিতরণের সময় অনিয়ম করে আসছেন। চাল ওজনে কম দেয়াসহ নামে বেনামে বিভিন্নভাবে পরিষদের গুদাম থেকে চাল সরানোর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

ইউনিয়নের মোছলেউদ্দিন মাঝি বলেন, আমাদের মধ্যে অনেক জেলে রয়েছে ঠিকভাবে চাল পায় না। চাল পায় চায়ের দোকানদার, মুদি দোকানদারসহ চেয়ারম্যানের আত্মীয়স্বজনরা। ব্যবসায়ী সোলায়মান বলেন, প্রতিবারই চাল দেয়ার সময় কিছু চাল বিতরণ করে বাকি নিয়ে যায় বিভিন্ন দিকে।

এবারও জেলেদের চালে অনিয়ম করে পরিষদ থেকে নিয়ে রাখা হয় বিভিন্ন বাসা বাড়িতে। তারা নামে বেনামে নিজেদের লোক দিয়ে জেলে সাজিয়ে চাল উত্তোলন করেন।

এদিকে চেয়ারম্যান ও তার ভাতিজাসহ ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার ওমরের বিরুদ্ধে প্রতিবছরই চাল বিতরণে অনিয়মের পাশাপাশি পরিষদ থেকে চাল সরানোর বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওনকে জানায় ভুক্তভোগীরা। পরিষদ থেকে সরিয়ে নেয়া চাল উদ্ধারের পাশাাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন এমপি।

পরে ট্যাগ অফিসার রফিকুল ইসলাম, পিআইও অপূর্ব দাস ও লালমোহন থানার পুলিশ পরিষদ এলাকায় অভিযান চালান। শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালান তারা। ওমর মেম্বারের ওয়ার্ড থেকেই এসব চাল উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামের ঘর থেকে ৪ বস্তা, ওমর মেম্বারের কর্মী সুমন ড্রাইভার এর ঘর থেকে ৯ বস্তা ও পরিষদের পাশে স-মিল এর কাঠের গুড়ির মধ্যে লুকিয়ে রাখা আরও ২ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে আরও কয়েকটি ঘর থেকে চাল সরিয়ে ফেলা হয়।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদুল হক তালুকদার বলেন, এসব চাল কার্ডধারী জেলেদেরকে দেয়া হয়েছে। তারা চাল হাতে পেয়ে ঘরে না নিয়েই আমাদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।

লালমোহন উপজেলা ট্যাগ অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, আমি জেলেদের নিয়মমতো চাল বিতরণের তদারকি করেছি। তারপরও এসব চাল কিভাবে বাইরে বের হলো তা আমার মোটেও বোধগম্য নয়। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।

এদিকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ ওমরকে আটক করেছে পুলিশ। এ ব্যাপরে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খাইরুল কবির বলেন, চাল চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার ওলিকে আটক করা হয়েছে। এর সাথে জড়িত বাকিদেরকেও আটক করা হবে বলে তিনি জানান।

Exit mobile version