Site icon Jamuna Television

বরফ থেকে একটু দূরে!

‘শীতে কাঁপছে দেশ’ বলে এবারের শৈত্য প্রবাহের মাত্রা বুঝানো যাচ্ছে না! বলতে হচ্ছে ‘বরফ হয়ে যাচ্ছি!’ হ্যাঁ, বরফ-ই তো। সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদ্প্তর জানিয়েছে, দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্র রেকর্ড করেছে তারা। পঞ্চগড়ে তেতুলিয়ায় ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরফ থেকে একটু দূরে। শূন্য ডিগ্রি হলে হয়তো মেরু অঞ্চলের মতো তুষারপাত হতো বাংলাদেশেও!

পঞ্চগড়েই সীমাবদ্ধ নয় শীতের এই ভয়াবহ প্রকোপ। সাত বিভাগের সব ক’টিতেই তিন দিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক অঙ্কের ঘরে উঠানামা করছে। বেশিরভাগ বিভাগে আজ সোমবার ছিল ৫ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।

নীলফামারীর সৈয়দপুরে আজ ভোরে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি, ডিমলায় ছিল ৩ ডিগ্রি, কড়িগ্রামের রাজারহাটে ৩ দশমিক ১, দিনাজপুরে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলমাল শৈত্য প্রবাহটি রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে এখন তীব্র শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী তিন দিন এই পরিস্থতি চলতে থাকবে।

ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৫ ডিগ্রি দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শীতের তীব্রতায় ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জন্য। গ্রাম এলাকায় পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। উত্তারঞ্চলের তিন জেলায় শীত জনিত কারণে ইতোমধ্যে ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

উত্তরের জেলায় শীতের তীব্রতা এতটাই বেশি যে রাতের বেলায় আকাশ থেকে ঝরছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। দিনের বেলায়ও কুয়াশার রেশ কাটেনি। এর সঙ্গে উত্তর দিক থেকে আসছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। তাই স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা এখন আগুনের কুণ্ডলী। শীতের ছোবল থেকে বাঁচতে দিনরাত সব সময়ই তারা আগুনের কাছে দাঁড়িয়ে নিজেদের রক্ষা করছেন।

নতুন বছর শুরুর আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল, জানুয়ারি মাসে অন্তত তিন কিস্তিতে শৈত্য প্রবাহ হবে। তবে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে তা হয়তো কারো ধারণায়ই ছিল না। অধিদপ্তরের কাছে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তাপমাত্রার রেকর্ড আছে। বাংলাদেশে তাপমাত্রা এত কমে যাওয়ার নজির অতীতে আর নেই। এর আগে ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

Exit mobile version