Site icon Jamuna Television

করোনা গবেষণায় চীনকে অর্থায়ন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র

ভাইরাস গবেষণায় চীনা প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার। গুহা থেকে ধরা বিভিন্ন বাদুড়ের ওপর করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন চীনের উহান শহরের একটি ল্যাবের বিজ্ঞানীরা।

এতে মার্কিন সরকারের অনুদান ছিল ৩৭ লাখ ডলার। দুর্ঘটনাক্রমে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সন্দেহে বর্তমানে চীন সরকারের তদন্তাধীন রয়েছে উহান ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজি নামের ল্যাবটি।

প্রাথমিকভাবে উহানের একটি সিফুড মার্কেট থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার কথা বলা হলেও বিজ্ঞানীরা এখন মনে করছেন, ওই ল্যাব থেকেই ছড়িয়েছে করোনা। ফাঁস হয়ে যাওয়া নথিপত্রের বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ডেইলি মেইল।

বিস্ফোরক এসব তথ্য সামনে আসার পরই পশ্চিমা বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

মার্কিন সরকারের অর্থায়নে চীনা ভাইরাস গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গোপন পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে ‘ভয়াবহ ও নির্মম’ বলে অভিহিত করে এর কঠোর নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা ও কয়েকটি অধিকার সংগঠন।

ডেইলি মেইল জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছে উহান ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজি। মার্কিন সরকারের অর্থায়নেই এই প্রকল্প চালিয়েছেন ল্যাবের বিজ্ঞানীরা।

বাদুড়সহ এসব ধরা হয় উহান থেকে কমপক্ষে ১০০০ মাইল দূরে ইউনান প্রদেশের পাহাড়ের গুহা থেকে। করোনাভাইরাসের যে জিনোম সিকোয়েন্সি তার সঙ্গে ইউনানের গুহা থেকে ধরা বাদুড়গুলোর মিল পাওয়া গেছে।

কিন্তু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর প্রথম দিকে এটা উহানের একটি পশুপাখির বাজার থেকে ছড়িয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছিল।

গত সপ্তাহে আরেক প্রতিবেদনে ডেইলি মেইল জানায়, পশুপাখির বাজার নয়, উহান ইন্সটিটিউট থেকে দুর্ঘটনাক্রমে ভাইরাস অবমুক্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে এই মহামারী সৃষ্টি করেছে।

আলজাজিরার মতে, এ ব্যাপারে একটি স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতিও দিয়েছেন ল্যাবের খ্যাতনামা নারী বিজ্ঞানী শি ঝেংলি। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে শি ঝেংলি বলেন, ‘করোনাভাইরাস তার ইন্সটিটিউট থেকে ছড়িয়ে থাকতে পারে।’

চীনের বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানীরাও ল্যাব থেকে দুর্ঘটনাক্রমে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। ডেইলি মেইল বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথের অর্থায়নে একটি প্রকল্পে বাদুড়ের ওপর বিজ্ঞানীরা ওই পরীক্ষা করছিলেন। সেখানকার গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের নভেম্বরে।

ওই গবেষণা রিপোর্টের শিরোনাম ‘ডিসকভারি অব এ রিচ জিন পুল অব ব্যাট সার্স-রিলেটেড করোনাভাইরাস প্রোভাইডস নিউ ইনসাইটস ইনটু দ্য অরিজিন অব সার্স করোনাভাইরাস’।

এর মূল বক্তব্য ছিল, চীনের ইউনান প্রদেশের গুহা থেকে আটক করা বাদুড়ের দেহ থেকে করোনাভাইরাসের গবেষণার জন্য ওই ল্যাবরেটরিতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এনিম্যাল এথিকস কমিটি অব দ্য উহান ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজির অনুমোদনক্রমে পশুচিকিৎসকরা নতুনা সংগ্রহ বা তা নিয়ে গবেষণা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।

ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ের একটি গুহা থেকে ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ১০ বার বাদুড়ের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

Exit mobile version