Site icon Jamuna Television

করোনায় স্বস্তি পেতে উপুড় হয়ে শোয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের

শ্বাসকষ্ট হলে চেষ্টা করুন উপুড় হয়ে শুতে, তাতে কষ্ট কমবে। ধারণাটা নতুন বা অভিনব নয়। বস্তুত, শ্বাসকষ্টের উপশমের এই উপায় সাত বছর আগেই বলেছিলেন একদল ফরাসি গবেষক। সংবাদ প্রতিদিন।

করোনা চিকিৎসায় উপুড় হওয়ার চমকপ্রদ কার্যকারিতার কথা জানা গেল দুই চিকিৎসকের ফোনালাপে। যেখানে কোভিড পজিটিভ এক বছর চল্লিশের যুবকের প্রাণ বাঁচাতে উপুড় করিয়ে শোয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন আমেরিকার নর্থওয়েল হেলথের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট অধিকর্তা ডা. মঙ্গলা নরসিংহম। প্রায় মরো মরো যুবকটি কার্যত নিশ্বাসই নিতে পারছিলেন না। রক্তে দ্রুত কমছিল অক্সিজেনের মাত্রা। সুরাহা খুঁজতে ডা. মঙ্গলাকে ফোন করেন সহকর্মী চিকিৎসক। জানতে চেয়েছিলেন, রোগীকে লাইফ সাপোর্ট বা ভেন্টিলেশনে দেবেন কিনা? জবাবে ফোনেই ফরাসি গবেষণার প্রসঙ্গ টেনে রোগীকে উপুড় করিয়ে শোয়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন সিসিইউ বিশেষজ্ঞ। চিকিৎসা পরিভাষায় যা কি না ‘প্রন পজিশন’ নামে পরিচিত। ডা. মঙ্গলার সেই পরামর্শই সঞ্জীবনী হয়ে প্রাণ বাঁচায় যুবকটির। ভেন্টিলেটর ছাড়াই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা হুড়মুড়িয়ে বাড়ে।

চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা, উপুড় অবস্থায় ফুসফুসের যে সব জায়গায় হাওয়া পৌঁছতে পারে, চিৎ হয়ে শুলে তা হয় না। অর্থাৎ উপুড় হয়ে শুলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে। উল্টো চিৎ অবস্থায় শরীরের ওজন ফুসফুসের উপর চাপ সৃষ্টি করায় অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা কমে যায়। পালমোনারি রি-হ্যাবের এই মূল নীতিই প্রতিফলিত হয়েছিল সাত বছর আগে শ্বাসকষ্টের রোগীদের উপর ফরাসি গবেষকদলের চালানো ‘ট্রায়াল’-এর ফলাফলে।

রিপোর্টটি প্রকাশিত হয় ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’-এ। রোগীদের দু’ভাগে ভাগ করে এক দলকে চিৎ করে ও অপর দলকে উপুড় করে শোয়ানো হয়। দেখা যায়, উপুড় করে শোয়ানোর জন্য রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা এক লাফে ৮৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৮ শতাংশ। শহরের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের মতে, ভেন্টিলেটর-সহ পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। এই ‘প্রন পজিশন’ টেকনিক করোনা-যুদ্ধে গেমচেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে। তাদের বক্তব্য, কোভিড রোগীর শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে বা শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দুম করে ভেন্টিলেশনে না দেওয়াই ভাল। বরং, আগে এই প্রন পজিশনে রেখে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

শুধু আমেরিকা নয়, কোভিড-যুদ্ধে ব্রিটেনের চিকিৎসকদের কাছেও অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এই ‘প্রন পজিশন’। আইসিইউ-তে থাকা অনেক রোগীকেই মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনছে এই ‘অ্যানাটমিক্যাল পজিশন’।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

Exit mobile version