Site icon Jamuna Television

আমার ফোনেও এসএমএস আসে, আপা খাবার নেই: প্রধানমন্ত্রী

করোনা পরিস্থিতিতে সবাইকে সংবেদনশীল ও সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি বলেন, মানুষ যেন খাদ্যের জন্য কষ্ট না পায়। অনেক সময় আমার ফোনেও এসএমএস আসে, আপা, আমার ঘরে খাবার নাই। সঙ্গে সঙ্গে খাবার পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে আছেন, তাদের ঘরে খাবার নেই, কিন্তু হাত পাততে পারেন না। তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়কে হটলাইন ৩৩৩—এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের কেউ সাহায্য চাইলে সঙ্গে সঙ্গে যেন খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়।

শনিবার বিকেলে শুরু হওয়া সপ্তম অধিবেশনের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র দেড় ঘণ্টার মতো। সংসদে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া চিকিৎসক মঈন উদ্দিন, দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক জালাল সাইফুর রহমানসহ দেশে–বিদেশে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতি শোক প্রকাশ করা হয়।

ঝড়–ঝাপটা–দুর্যোগ আসে, আসবেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হতাশ হওয়ার বা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সাহসের সঙ্গে যার যার অবস্থান থেকে এটা মোকাবিলা করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন পারদর্শী। কিন্তু করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাস মোকাবিলার পূর্ব অভিজ্ঞতা দেশের নেই। তারপরও এখন পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ অন্য দেশের চেয়ে ভালো আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে আশঙ্কা করছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে যাতে এর প্রভাব না পড়ে, সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অর্থনীতি গতিশীল রাখতে তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। যেসব বড় উন্নয়ন প্রকল্প এখনই সমাপ্ত না করলে চলে, সেসব প্রকল্পের অর্থ সাশ্রয় করে জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে।

দেশে খাদ্যের অভাব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এখন ধান কাটার সময় হয়েছে। শ্রমিকেরা যাতে ধান কাটতে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি ছাত্রসমাজকে ধান কাটার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই মিলে ধানটা ভালোভাবে তুলে ফেলতে পারলে খাবারের অভাব হবে না।

জনসাধারণকে ঘরে থাকা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে মানুষ সাহসী হতে হতে একটু বেশি সাহসী হয়ে গেছে। তাদেরকে বলা হলো ঘরে থাকেন, ঘরে না থাকে বউ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গেল। শিবচর থেকে টুঙ্গিপাড়া হাজির। করোনাভাইরাস টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত পৌঁছে গেল। নারায়ণগঞ্জ থেকে চলে গেল বরগুনা। আমরা বারবার অনুরোধ করছি, আপনারা যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকেন। যাতে আমরা এটাকে (ভাইরাস) একটা জায়গায় ধরে রাখতে পারি এবং সেখান থেকে মানুষকে যদি সুস্থ করতে পারি, তাহলে এটা বিস্তার লাভ করে না। কেন জানি মানুষ এটা মানতে চায় না।

Exit mobile version