Site icon Jamuna Television

করোনা কি ভারতের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে?

সারা বিশ্ব কাঁপছে করোনা আতঙ্ক। প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বিশ্বজুড়ে করোনার প্রকৃতি নির্ণয়ের জন্য এরই মধ্যে মৃত্যুহার তদন্ত করা হচ্ছে। তবে অবাক করার বিষয় হলো পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে কমে এসেছে মৃত্যুহার। এমনকি স্বাভাবিক পরিস্থিতির তুলনায়ও মৃত্যুহার কমে গেছে।

ভারতীয় চিকিত্সক, কর্মকর্তা এবং শ্মশান কর্মচারীরা বলছেন যে, কম মৃত্যুর হার অনেকাংশেই কম সড়ক ও রেল দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। এদিক ইতালি জার্কাতা, স্পেন সবজায়গায় মৃতের সংখ্যা আগের চেয়ে বেশি।

এ প্রসঙ্গে আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, সড়ক দুর্ঘটনা, মাদক সেবন, স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যাও কমেছে।

উত্তরপ্রদেশের একটি শ্মশান ঘাটের দায়িত্বে থাকা নীরজ কুমারের বরাত দিয়ে বলা হয়, “আগে প্রায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১০টা এমন ঘটনা আসত। কিন্তু লকডাউনের পর স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়েছে এমন দেহই আসছে।”

পরিসংখ্যান বলছে, লকডাউনের কারণে ২০১৮ সালের সাথে তুলনায় মৃত্যুহার কমেছে শতকরা ১৫ ভাগ। সম্প্রতি ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৭১৮ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে ২৩ হাজার ৭৭ জন মানুষ।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে করোনার উৎপত্তি হয়। এখন পর্যন্ত ২৭ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার মানুষের। এরই মধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে মৃত্যুহারের অবস্থা ঠিক তার উল্টো।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেখানে প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা সেখানে ভারতের চিত্র পুরো ভিন্ন। বিশেষ করে কিছু স্থান যেমন: হাসপাতাল, শ্মশান,কবরস্থানে কী হচ্ছে তা অবাক করার মত।

কলকাতা ও বেঙ্গালুরুর অ্যান্থায়েস্টি ফিউনেরাল সার্ভিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রুতি রেড্ডি বলেন, বিষয়টি আমাদের জন্য বিস্ময়কর। আগে যেখানে দিনে পাঁচটি সৎকারের কাজ করা হত সেখানে এখন করা হয় ৩টি।

মুম্বাইয়ের পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায়, মার্চের প্রথম এবং মাসের শেষের তুলনায় মৃতের সংখ্যা শতকরা ২১ ভাগ কমে এসেছে। আহেমেদাবাদে মৃতের সংখ্যা কমেছে শতকা ৬৭ ভাগ। আরো দুইটি বড় শহরের অবস্থা একই রকম । বিশেষ করে এপ্রিল মাসে ফিউনারেল ব্যবসায়ের ধস নেমেছে।

পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া এপিডেমোলজির অধ্যাপক গিরিধার বাবু বলছেন, যখনই আমরা মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখি তখনই সন্দেহ হয় সেখানে আরো অনেক মৃতের সংখ্যা আছে। এর আগে ভারতের লকডাউন বাড়িয়ে মে মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত করা হয়েছে।

ভারতে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ২৫ হাজার মানুষের টেস্ট করা হয়েছে যার মধ্যে শতকরা ৪ ভাগ মানুষের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পজেটিভ মানুষের সংখ্যা শতকরা ১৮ ভাগ।

Exit mobile version