Site icon Jamuna Television

রাজ্জাকের প্রিয় ১০ ছবি

নায়করাজ রাজ্জাক চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় তিনি রাজধানীতে একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

কিংবদন্তী এই নায়ক সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রকে। বিদায়ের সময়টিতে চোখের সামনে ভাসছে তার অভিনিত ছবির নানা দৃশ্য। গান বাজছে কানে।

আমরা এখানে নায়করাজের নিজের অভিনিত পছন্দের ১০টি ছবি সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরেছি। বিভিন্ন সময় মিডিয়ায় সাক্ষাৎকারে তার নিজের পছন্দের এসব ছবির নাম তিনি উল্লেখ করেছিলেন।

রংবাজ:

রাজা (রাজ্জাক) একটি বস্তি এলাকার রংবাজ, সে রংবাজি পকেটমারী সহ নানা ধান্দায় লিপ্ত থাকে সারাক্ষণ। ওই বস্তিরই মেয়ে মালা (কবরী) রাজাকে খুব ভালবাসে। একদিন রাজা এক চাকুরিজীবির (আনোয়ার হোসেন) পকেট মারে, লোকটা সেদিনই কেবল বেতন পেয়ে ফিরছিলো। এ কারনে পাওনা মিটাতে না পেরে লোকটাকে বাড়িওয়ালাসহ পাওনাদারদের কাছে চরম অপমান হজম করতে হয়।

অনন্ত প্রেম:

১৯৭৭ সালে মুক্তি পাওয়া অনন্ত প্রেম একটু ভিন্ন মাত্রার ছবি। প্রেমিকের সাথে প্রেমিকার পালিয়ে যাওয়া তখনকার সমাজে ছিল বিরল ঘটনা। ছবিটি প্রথাগত ছবির ধারণার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলো।

ছুটির ঘন্টা:

১৯৮০ সালে মুক্তি পায় ব্যতিক্রমী গল্পের এই ছবিটি। শিশুতোষ চলচ্চিত্র হিসেবেই সমধিক পরিচিত। ছবিটি পরিচালনা করেছেন আজিজুর রহমান। ঈদের ছুটি ঘোষণার দিন স্কুলের বাথরুমে তালাবদ্ধ হয়ে আটকে পড়ে ১২ বছর বয়সের এক ছাত্র। সেখানেই দীর্ঘ ১১ দিন কাটে তার। স্বজনদের প্রতিক্ষার মধ্যে দিয়ে ফুটে ওঠে করুণচিত্র।

অন্য একদিন:

১৯৭৩ সালে মুক্তি পায়। রাস্তার ছিঁচকে অপরাধীর মাঝে কেমন করে একটি অসাধারণ মনের মানুষ লুক্কায়িত থাকতে পারে তার গল্প নিয়ে এই ছবি। জহিরুল হক পরিচালিত ছবিটির মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন রাজ্জাক।

নীল অাকাশের নিচে:

এমন একটি ছবি যার সবগুলো গান হিট তকমা পেয়েছিলো। এখনও গানগুলো নতুন। ‘হেসে খেলে জীবনটা’, ‘নীল আকাশের নীচে আমি’, ‘গান হয়ে এলে’ ও ‘প্রেমের নাম বেদনা’। ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। পরিচালক নারায়ণ ঘোষ মিতা। তৎকালীন বাঙালি পরিবারের গল্পই ছবিটির প্রধান উপজীব্য।

জীবন থেকে নেয়া:

অসাধারণ এই ছবিটি নানা কারণে ছবিটি গুরুত্বপূর্ণ। ‘একটি দেশ, একটি সংসার, একটি চাবির গোছা, একটি আন্দোলন, একটি চলচ্চিত্র…’- এমন স্লোগান দৃষ্টি কেড়েছিলো সিনেমাপ্রেমীদের। জহির রায়হান ছিলেন এটির পরিচালক। মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে।

ময়নামতি:

রাজ্জাক অভিনীত ‘ময়নামতি’ ছবিটি উল্লেখযোগ্য অন্য কারণে। এটি তার একমাত্র ছবি যা রিমেক হয়েছে। ‘ময়নামতি’ রিমেক হয় ‘অনেক সাধের ময়না’ নামে। ২০১৪ সালে ছবিটি মুক্তি পায় জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে। রাজ্জাক-কবরীর স্থলাভিষিক্ত হন বাপ্পি ও মাহি। ছবিটির প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন রাজ্জাক ও কবরী। কাজী জহিরের ‘ময়নামতি’র রিমেক করেন জাকির হোসেন রাজু। ১৯৭৯ সালে মুক্তি পায়।

আলোর মিছিল:

নায়করাজের প্রিয় নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা। তারই ছবি ‘আলোর মিছিল’। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ছবিটি। এতে রাজ্জাকের পাশাপাশি আরও ছিলেন ববিতা, ফারুক, সুজাতা প্রমুখ। সংগীত পরিচালনা করেন খান আতাউর রহমান।

বড় ভালো লোক ছিলো:

‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুশ’ কিংবা ‘তোরা দেখ দেখরে চাহিয়া’ গানগুলো যারা শুনেছেন তারা জানেন ছবিটির নাম। ‘বড় ভালো লোক ছিলো মুক্তি পায় ১৯৮২ সালে। পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এটি রাজ্জাককে অভিনেতা হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব এনে দেয়। পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার।

স্বরলিপি:

‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। যুগ যুগ ধরে গানটি সৌরভ ছড়াচ্ছে। রাজ্জাক অভিনীত ‘স্বরলিপি’ ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছিলো এটি। নায়িকা ছিলেন ববিতা। পরিচালনা করেন নজরুল ইসলাম। ১৯৭০ সালে মুক্তি পায় ‘স্বরলিপি’।

বেঈমান:

রাজ্জাক অভিনীত আলোচিত ও সফল ছবি ‘বেঈমান’। তার নায়িকা ছিলেন কবরী। ছবিটি এখনও অনেকের প্রিয়। গানুগলোও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ‘বেঈমান’ পরিচালনা করেন রুহুল আমিন। ২০১৩ সালে ছবিটি রিমেকের ঘোষণা দিয়েও পরে আর কাজে লাগতে পারেননি রাজ্জাক নিজেই।

 

/কিউএস

Exit mobile version