Site icon Jamuna Television

গরিবরা আরও গরিব হচ্ছে, আয় কমেছে ৬০ ভাগ: সিপিডি

ঋণ লোপাট, ব্যাংকের মালিকানাধীনাসহ নানা কারণেই ২০১৭ সাল ছিল ব্যাংকিংখাতের কেলেংকারির বছর। ২০১৮ সালেও নাজুক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সুযোগ নেই। কারণ, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে মালিকদের পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি।

সংস্থাটি বলছে, ধারাবাহিকভাবে ভাল প্রবৃদ্ধি হলেও দারিদ্র বিমোচন কাঙ্খিত মাত্রায় হয়নি। বরং আয় বৈষম্য বেড়েছে। চলতি অর্থ বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আজ শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছে সিপিডি।

নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়া ব্যাংকিং করেছিল বেসরকারি ফারমার্স ব্যাংক। এতে আর্থিক ভিত্তি ভেঙে পড়ায় আমনত ফেরত নিতে শুরু করেন গ্রাহকরা। বেসরকারি এবি ব্যাংকের টাকা পাচারের ঘটনাও ছিল বছরজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে। শেয়ার কিনে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপ কর্তৃক কয়েকটি ব্যাংকের মালিকানা অর্জনেও উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতের নাজুক পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে। এমতাবস্থায় নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দিলে ঝুঁকি আরও বাড়াবে।

সিপিডির বিশেষ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য বলেন, আর্থিক খাতের এতসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ব্যাংক কোম্পানি আইনকে পরিবর্তন করে পরিবারের পরিচালকের সংখ্যা বাড়িয়েছে, তাদের মেয়াদকাল বাড়িয়েছে। এভাবে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দুর্বলতা তৈরির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় মনে করেন, ব্যবস্থাপনার এমন দুর্বলতাই মূলত এই খাতের সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর পথে বড় অন্তরায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতাকে এ ক্ষেত্রে দায়ী করেছেন তিনি।

সিপিডি বলছে, ধারাবাহিক ভালো প্রবৃদ্ধি হলেও তুলনামূলকভাবে দারিদ্র্য বিমোচন হয়নি। উল্টো আয় বৈষম্য বেড়েছে। যা বাধাগ্রস্ত করতে পারে টেকসই উন্নয়ন।

সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, যারা একেবারে গরীব আছেন, তারা আরও গরীব হয়ে যাচ্ছেন বলে আমরা লক্ষ্য করছি। উল্টো দিকে ধনীরা আরও সম্পদের মালিক হচ্ছেন। পরিসংখ্যান তুলে ধরে জনাব তৌফিক বলেন, একদিকে গরীব মানুষের আয় শতকরা ৬০ ভাগ কমেছে, অন্যদিকে ধনীদের আয় বেড়েছে ৬০ ভাগ।

সিপিডি বলছে, গত বছর ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ সন্তোষজনক ছিল না। আমদানি বাড়লেও এর আড়ালে অর্থপাচার হয়েছে কীনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে গবেষণা সংস্থাটি। নিরাপদ খাদ্য মজুদের জন্য অতিরিক্ত ৭০০ কোটি টাকা দরকার হতে পারে বলে জানিয়েছে সিপিডি।

Exit mobile version