Site icon Jamuna Television

রাজধানীতে মদ্যপ এএসপির কাণ্ড

‘পুলিশগুলো আমাকে এভাবে ধরে রেখেছে কেন? তারা আমাকে ঘিরে রেখেছে। আমাকে যেতে দিচ্ছে না। এটা আমার হল । এটা শহীদুল্লাহ হল। এখানে আমার ছোট ভাই ব্রাদাররা থাকে। আমাকে ছেড়ে দাও বলছি। তোমাদের পরিণতি ভালো হবে না।’

মশিয়ুর রহমান নামে মদ্যপায়ী এক এএসপি শাহবাগ থানার দারোগা পলাশকে এ কথাগুলো বলছিলেন। শুধু তাই নয়, এসময় তিনি তার পরনের হলুদ রংয়ের টি সার্ট ও কালো রংয়ের ফুলপ্যান্ট খুলে ফেলেন। এ মদ্যপায়ী বেপরোয়া এএসপিকে নিয়ে বে-কায়দায় পরেন শাহবাগ থানার দারোগা পলাশ।

জানা গেছে, গতকাল রোববার রাতে পুলিশ কন্ট্রোলরুম থেকে শাহবাগ থানায় খবর আসে সচিবালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে রাস্তায় একজন পুলিশ অফিসার সিভিলে রাস্তায় পড়ে আছেন। খবর পেয়ে ডিউটিরত এসআই পলাশ সহকর্মীদের নিয়ে দ্রুত ঘটঁনাস্থলে যেয়ে সেখানে মদ্যপ ও বেপরোয়া অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় পেয়ে দারোগা কিছুটা নমনীয় হন। কিন্তু তখনো এএসপি দারোগাকে তুলো ধুনা করে ছাড়ছেন। স্টোমা ওয়াশের কথা শুনে এক পর্যায়ে এএসপি হাসপাতাল টিকেট কাউন্টারের সামনে পুলিশের হাত থেকে ছুটে দৌড়ে বের হয়ে গেলে পুলিশও তার পিছু ছোটে।

একপর্যায়ে ঢাবি ক্যাম্পাসের শহীদুল্লাহ হলের গেটের সামনে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। এসময় ধ্বস্তাধ্বস্তির একপর্যায়ে মশিয়ুর তার গায়ের টি সার্ট এবং ফুল প্যান্ট খুলে ফেলে। শুধু একটি সর্ট হাফপ্যান্ট এবং খালি গায়ে বেসামাল অবস্থায় চিৎকার থাকে। তিনি বলেন, এটাতো আমার হল। এখানে আমার ছোট ভাই ব্রাদাররা আছে। আমাকে যেতে দিন। তার ডাক চিৎকারে আশপাশে থাকা কয়েকজন ছাত্র ঘটনাস্থলে হাজির হন। তার বিষয়টি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। এরপরই তাকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। কিন্তু দারোগা তার স্টোমা ওয়াশ না করিয়ে হলের ছাত্রদের হাতে ন্যস্ত করেন।

এ বিষয়ে এসআই পলাশ বলেন, ওসি সাহেব বলেছেন, স্যারের ছোট ভাইয়েরা আসলে তাদের হাতে তুলে দিতে। সে অনুযায়ী তাকে ছাত্রদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ পুলিশ অফিসার বিসিএস ক্যাডারের একজন এএসপি। এরআগেও একাধিকবার মদ খেয়ে শাহবাগ মোড়ে বেপরোয়া হয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। সে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এএসপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে একাধিক অনৈতিক ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। তার বিষয়টি নতুন কিছু নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, তার এহেন কর্মকাণ্ডের ফলে গোটা পুলিশ বাহিনীর ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার তদন্ত চলছে বরেও ওসি মন্তব্য করেন।

Exit mobile version