Site icon Jamuna Television

ভালো নেই সাদুল্লাপুরের এমব্রয়ডারি পল্লীর নারী কারিগররা

জিল্লুর রহমান পলাশ, গাইবান্ধা:

করোনা প্রভাবের কারণে নান্দনিক ডিজাইন আর বাহারি রঙের শাড়ি, থ্রি-পিস ও সালোয়ার কামিজসহ হাতের তৈরি পোশাক নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার এমব্রয়ডারি পল্লীর দুই শতাধিক নারী কারিগর।

উপজেলা শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে জামুডাঙ্গায় (মণ্ডলপাড়া) গড়ে উঠেছে এমব্রয়ডারি পল্লী। ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা আর বড় বিকিকিনির আশায় পোশাক তৈরিতে বিনিয়োগ করেছিলেন তারা। কিন্তু ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকী থাকলেও পাইকারি ব্যবসায়ীদের খুব একটা দেখা মিলছেনা। ফলে লোকসান আর পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামের দুই শতাধিক নারী কখনো বাড়িতে আবার কখনো উঠনো বসে শাড়ি, থ্রি-পিস ও সালোয়ার কামিজসহ বিভিন্ন পোশাকে সুই আর রঙ্গিন সুতায় বাহারি নকশার কাজ করছেন। প্রত্যোকের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় একেকটি পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে নান্দনিক সব নকশা।

কাজের ফাঁকে কথা হয় নারী কারিগরদের সাথে। তারা জানান, কিছুদিন আগেও তাদের সংসারে অভাব ছিলো। পরে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাপড়ের কাজ করায় এখন বাড়তি উপার্জন হচ্ছে। প্রতিটি শাড়ি ও জামায় কাজ করে মজুরি হিসেবে মাসে তিন থেকে চার হাজার টাকা আয় করে ভালোই চলছিলো। এ কাজ করে আর্থিক স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখলেও করোনার প্রভাবে আগের মতো কাজ করতে পারছেন না তারা। ফলে সামনে অন্ধকার দেখছেন এসব নারীরা।

এমব্রয়ডারি পল্লীর নারী উদ্যোক্তা লাভলী বেগম বলেন, করোনার প্রভাবে বৈশাখেও পোশাক বিক্রি হয়নি। এখন ঈদের মার্কেটেও তেমন জমেনি। এতে পোশাক মজুদ থাকায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে বলেও জানান তিনি। বলেন, সংকট মোকাবেলা এখনই সরকারি সহায়তার প্রয়োজন।

সাদুল্লাপুর পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো.সাইফুজ্জামান জাহিদ বলেন, অসহায়-কর্মহীন নারীদের স্বাবলম্বী করতে পাঁচটি সমিতির মাধ্যমে দুই শতাধিক নারীকে সেলাই প্রশিক্ষণসহ ঋণ সহায়তা দেয়া হয়। প্রশিক্ষণের পর পোশাক তৈরীর উপার্জিত অর্থে ভালোই চলছিলো তাদের সংসার। কিন্তু করোনার প্রভাবে এই পল্লীর অন্তত ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার ক্ষতির আশষ্কা করা হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি উত্তরণে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের পাশে থাকাসহ সহায়তার সব ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানান তিনি।

সাদুল্লাপুর ইউসিসিএ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস সংকটের এই মর্হুতে নারী উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের টিকে থাকা অসম্ভব। তাই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠাসহ নারী কারিগরদের জীবন মান উন্নয়নে প্রাণোদনা আর সহজ শর্তে ঋণ সহায়তার পাশাপাশি সরকারকে সর্ব্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বি.আর. ডি.বি) বাস্তবায়নে এমব্রয়ডারি পল্লী গড়ে তোলা হয়।

Exit mobile version